আলাদা রাজ্যের দাবিতে ভারতের লাদাখে বিক্ষোভ ও সহিংসতার ২৪ ঘণ্টা পর সোনম ওয়াংচুকের এনজিও নিবন্ধন বাতিল করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় ও ক্ষমতাসীন দল বিজেপির একাধিক নেতার অভিযোগ, ওই বিক্ষোভে ‘উসকানি’ দিয়েছেন ওয়াংচুক।
বৃহস্পতিবার এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। লাদাখের শিক্ষা ব্যবস্থায় সংস্কারের জন্য ১৯৮৮ সালে ‘স্টুডেন্টস এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল মুভমেন্টস অব লাদাখ’ নামে একটি অলাভজনক এনজিও গড়ে তোলেন ওয়াংচুক। এনডিটিভি বলছে, বিদেশি অনুদান সংক্রান্ত আইনের একাধিকবার লঙ্ঘন করায় নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে।
সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, ওয়াংচুকের সংস্থার বিরুদ্ধে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ধরা পড়েছে। তবে সোনম ওয়াংচুক বলেছেন, তাঁকে দমিয়ে রাখার জন্যই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তাঁর সংগঠন কোনো বিদেশি তহবিল নেয় না। আফগানিস্তানের জন্য তাঁদের তৈরি করা প্যাসিভ সোলার হিটেড বিল্ডিং নিতে চেয়েছিল জাতিসংঘ। এর বিনিময়ে তারা অর্থ দিয়েছে।
লাদাখকে রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে ১০ সেপ্টেম্বর থেকে অনশন শুরু করেন লেহ অ্যাপেক্স বডি নামে একটি সংগঠনের ১৫ সদস্য। সোনম ওয়াংচুকও তাদের একজন। অনশনকারীদের মধ্যে দুজন গত মঙ্গলবার অসুস্থ হয়ে পড়লে বুধবার হরতালের ডাক দেয় অ্যাপেক্স বডির যুব শাখা। এদিনই পুলিশের সঙ্গে তরুণদের সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন নিহত হন বলে জানিয়েছে এএফপি। তবে এনডিটিভি বলছে, নিহত হয়েছেন চারজন।
বুধবারের সংঘর্ষের পরই ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে দাবি করে, বিক্ষোভের উসকানি দিয়েছেন ওয়াংচুক। তাঁর বক্তব্যের কারণেই বিক্ষোভকারীরা লাদাখে বিজেপির কার্যালয় ও নির্বাচনী কর্মকর্তার অফিসে হামলা করে।
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বৃহস্পতিবার লাদাখের প্রধান শহর লেহ’তে কারফিউ জারি হয়। এএফপি জানিয়েছে, এদিন শহরের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের টহল দেখা গেছে। শহরটিতে সবসময়ই পর্যটকদের আনাগোনা থাকে। কারফিউয়ের কারণে তারা বেশ বিপাকে পড়েন। শহরের প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলিতে কাঁটাতার দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছে।
লেহ’র এসএনএম হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, বুধবার থেকে তারা ১০০ জনকে চিকিৎসা দিয়েছেন। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন পুলিশের সদস্য।
ওই চিকিৎসক আরও জানান, আহতদের মধ্যে হাসপাতালে ছয়জনের অস্ত্রোপচার হয়েছে। তাদের তিনজন গুলিবিদ্ধ ছিলেন। বাকিদের পাঁজর ভাঙা ও শরীরের অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ ছিল।
ইউটি/টিএ