ছোটবেলায় কখনোই অভিনেতা হওয়ার ইচ্ছে ছিল না। ক্রিকেট খেলতেন, ড্রাম বাজাতেন আর সন্ধ্যায় পকেট মানি উপার্জন করতেন। কিন্তু পরিবারের আর্থিক টানাপড়েন আর ভাগ্যের মোড় তাকে নিয়ে আসে অভিনয়ের জগতে।
১৯৭৭ সালে থিয়েটার অভিনেতা উজ্জ্বল সেনগুপ্তের পরিবারে জন্ম নেন যীশু সেনগুপ্ত।
সাধারণ পরিবারের ছেলে যীশুর শৈশব কেটেছে নানা অভাব-অনটনের মধ্যে। এমনো সময় গেছে যখন বাড়িতে খাবার বা বিদ্যুৎ কিছুই থাকত না।
১৯৯৮ সালে টেলিভিশন শো ‘মহা প্রভু’ দিয়ে অভিনয়ে পা রাখেন যীশু। প্রথম দিকে প্রতিদিনের পারিশ্রমিক ছিল মাত্র ২৫০ রুপি। আর্থিক প্রয়োজনে ক্রিকেট ও ড্রাম ছেড়ে দিতে হয়েছিল তাকে।
সেই সময়ের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন ২৫০ রুপি আমার কাছে বিশাল ছিল। এটি একটি ডেইলি সোপ ছিল, তাই আমাকে ক্রিকেট ও ড্রাম ছেড়ে দিতে হয়েছিল।’
কিন্তু ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায়।
‘মহা প্রভু’ সুপারহিট হয় আর যীশু হয়ে ওঠেন বাংলার টিভির প্রথম সুপারস্টার। কলকাতার ‘হৃত্বিক রোশন’ হিসেবেও খ্যাতি পান তিনি। আর্থিক উন্নতিও ধীরে ধীরে আসে—নতুন ফোন, ফ্রিজ, ঘর রং, আধুনিক বাথরুম—সবই আসে ধাপে ধাপে।
সেই সময়ের স্মৃতিচারণা করে যীশু বলেন, ‘প্রথমে পেলাম একটি ফোন। ফ্রিজ ছিল ভাঙা, স্ট্যান্ড ভেঙে গেছিল। পরে ধীরে ধীরে সব ঠিক হলো—ঘর রং হলো, বাথরুম আধুনিক হলো।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমার সংগ্রামের গল্প অনেকেই বলে, কিন্তু আমার কাছে তা সংগ্রাম মনে হয়নি। কাজ করছিলাম, অর্থ উপার্জন করছিলাম। আমরা সাধারণ ছিলাম, তাই টাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’
এরপর একে একে টলিউড থেকে বলিউড, দক্ষিণি সিনেমা—সব জায়গাতেই সফলতার ছাপ রেখেছেন তিনি। টলিউডের বাইরে এখন বলিউড ও সাউথ-দুই ইন্ডাস্ট্রিতেই ব্যস্ত সময় পার করছেন এই অভিনেতা। জীবনের ওঠানামা দেখে আজ যীশু সেনগুপ্ত কৃতজ্ঞ।
তার ভাষ্যে, ‘যদি আগামীকাল আমার মৃত্যু হয়, আমার কোনো আফসোস থাকবে না।’
এবি/টিএ