বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার পতিত সরকারের ছেড়া জুতা পায়ে দিয়ে চলার চেষ্টা করছে। তাদের কারো কারো মধ্যে ছোট ছোট শেখ হাসিনা হয়ে ওঠার কর্তৃত্ববাদী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণঅভ্যুত্থানে তরুণরা দ্রোহের যে আগুন জ্বেলে দিয়েছিন গত ১৪ মাস ধরে সরকার তাতে কেবল পানি ঢেলে চলেছে। এতে জনগণ ধারাবাহিকভাবে প্রতারিত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, গণ- অভ্যুত্থানে যুবরা অধিকার প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন দেখেছিল গত এক বছরে তা হতাশায় পর্যবসিত হয়েছে। পরিবর্তনের সম্ভাবনার অনেকখানি খেয়ে ফেলেছে।
তিনি ক্ষোভের সঙ্গে উল্লেখ করেন, অনেকেই তরুণদেরকে ব্যবহার করেন, কিন্তু তাদের অধিকার দিতে চান না।
নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতেই তারা যুবশক্তিকে মবসন্ত্রাসহ নানা অপকাজে ব্যবহার করে আসছ। তিনি এই অবস্থার পরিবর্তনে তরুণ যুবশক্তিকে রাজপথে জেগে থাকার আহ্বান জানান।
সরকারকে তাদের জানা অজানা এজেন্ডা গুটিয়ে এনে বিচার ও সংস্কারের প্রক্রিয়ায় আগামী ফেব্রুয়ারিতে অবাধ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানেই যাবতীয় মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করার আহবান জানান সাইফুল হক। তিনি সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ঝুঁকিতে পড়লে দেশ অভূতপূর্ব বিপদের মধ্যে নিক্ষিপ্ত হবে।
কনভেনশনে কবি মোহন রায়হান বলেন, তরুণ যুবশক্তিই আমাদের প্রাণ। যুগে যুগে তারাই দ্রোহের আগুন জ্বালিয়ে এসেছে। আমাদের গণ- অভ্যুত্থানে তারাই ছিল আমাদের ভরসার জায়গা। গণঅ'ভ্যুত্থান যাতে ব্যর্থ না হয় তার জন্য যুবশক্তিকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রাশেদ আল তিতুমীর বলেন, বৈষম্য বিলোপ করতে না পারলে গণ- অভ্যুত্থানের সাফল্য ব্যর্থ হয়ে যাবে।
তিনি তরুণ যুবকদের কর্ম সংস্থানসহ মানবিক জীবনের জন্য সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহনের দাবি জানান।
নৃবিজ্ঞানী ড. মোশরেকা অদিতি হক বলেন, ইতিহাসে অনেক বিপ্লব, অভ্যুত্থান তার বিপ্লবী সন্তানদের খেয়ে ফেলেছে। আমরাও এই বিপদের মধ্যে আছি।বিপ্লবের নামে আমাদের গৌরবের অর্জনকে অস্বীকার করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। দেশকে পিছনে টানার অপচেষ্টা চলছে। যুবশক্তিকে এসব অপতৎপরতা বিরুদ্ধে প্রতিরোধ অব্যাহত রাখতে হবে। নিজেদের অধিকার ও মুক্তির জন্য যুব জাগরণ ঘটাতে হবে।
‘যুবপ্রাণ জাগিয়ে তুলুন, অধিকার ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করুন’এই স্লোগানে অনুষ্ঠিত যুব কনভেনশনে সভাপতিত্ব করেন কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক বাবর চৌধুরী। যুবনেতা মীর রেজাউল আলমের সঞ্চালনায় কনভেনশনে আরো বক্তৃতা করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী ও আকবর খান, কৃষক নেতা আনছার আলী দুলাল, শ্রমিক নেতা মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক ও সাইফুল ইসলাম।
কনভেনশনের দ্বিতীয় অধিবেশনে যুব অধিকার ও ইনসাফ ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় জাতীয় যুব কনভেনশনের ঘোষণা দাবিনামা গ্রহণ করা হয়।
কেএন/টিকে