জুলাইকে সাংবিধানিক ও আইনি ভিত্তি দিতে হবে : বুলবুল

জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের আগে এ ঘোষণাপত্রকে সংবিধানিক ও আইনি ভিত্তি দিতে হবে- এমন দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নুরুল ইসলাম বুলবুল।

শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা পার্কে জামায়াতে ইসলামীর জেলা শাখা আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ দাবি করেন। সমাবেশে জুলাই সনদের আইনগত স্বীকৃতি ও পিআর (প্রতিনিধিত্বমূলক) পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।

নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ইতিমধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে জাতির সামনে যে জুলাই ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়েছে, তা একটি ত্রুটিপূর্ণ দলিল। এই ঘোষণাপত্র সংশোধন করে রাষ্ট্র, সংবিধানসহ সবকিছু ‘জুলাই সনদ’-এর আওতায় নিয়ে আসতে হবে এবং সব রাজনৈতিক দলকে তাতে স্বাক্ষর করাতে হবে। এরপর সংবিধানিক ও আইনি ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। অন্যথায়, পুরনো পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে তা জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারবে না। বরং সে নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও একটি ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় আসবে।

তিনি আরও বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে ভোটের সঠিক মূল্যায়ন হবে। কালো টাকা, পেশিশক্তি এবং ভোটকেন্দ্র দখলের রাজনীতি বন্ধ হবে। ছোট দলগুলোর জন্যও আসন পাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে, যা একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক সংসদ গঠনে সহায়ক হবে। এতে করে কোনো একক দল রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করে ফ্যাসিবাদী আচরণ করতে পারবে না।

রাষ্ট্র সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, যদি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার ও মেরামত না করা হয়, সংবিধান সংশোধন না হয় এবং আবারও একটি প্রহসনের নির্বাচন হয়, তাহলে বাংলাদেশকে ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত করা যাবে না। আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি ২০১৮ সালের জুলাই-আগস্টে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিচার করতে হবে। তখন দুই হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, মিথ্যা মামলায় হয়রানি, গুম ও খুনের শিকার হয়েছেন। এসব অপরাধের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সমালোচনা করে বুলবুল বলেন, শুধু খুনিদের নয়, খুনিদের দোসরদেরও বিচার করতে হবে। যারা শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট শাসক হওয়ার পথে সহযোগিতা করেছে, তারা আজ চুপচাপ তামাশা দেখছে। তাদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আমির অধ্যাপক আবু জার গিফারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও পৌরসভার সাবেক মেয়র নজরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এমপি অধ্যাপক লতিফুর রহমান, জেলা নায়েবে আমির ও সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মুখলেসুর রহমান, পৌর আমির হাফেজ গোলাম রাব্বানী, উপজেলা আমির হাফেজ আব্দুল আলিম, শহর শাখা ইসলামি ছাত্রশিবিরের সভাপতি আব্দুল আজিজ প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে নুরুল ইসলাম বুলবুলের নেতৃত্বে এক বিক্ষোভ মিছিল পৌর পার্ক থেকে শুরু হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শান্তি মোড়ে এসে শেষ হয়।

ইউটি/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বরিশালে পার্কে প্রবেশ নিয়ে দুই সাংবাদিককে মারধর ছাত্রদল নেতাদের Sep 27, 2025
img
বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ, চার সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত Sep 27, 2025
img
রোমাঞ্চে ঠাসা ম্যাচে সুপার ওভারে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভারতের জয় Sep 27, 2025
img
সায়েদাবাদ রেলগেটে ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ গেল একজনের Sep 27, 2025
img
চসিকের ওয়ার্ড কার্যালয়ে আগুন Sep 27, 2025
img
দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার করতে চায় বাংলাদেশ ও ইরাক Sep 27, 2025
img
পূজামণ্ডপ পাহারায় থাকবে বিএনপি : আমান Sep 27, 2025
img
আলবেনিয়ার ভিসা সহজ করার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার Sep 27, 2025
img
মামুনের গুম ইস্যুতে মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার এনসিপি ও জাতীয় যুবশক্তি: তারিকুল Sep 27, 2025
img
জুলাইকে সাংবিধানিক ও আইনি ভিত্তি দিতে হবে : বুলবুল Sep 26, 2025
img
দুর্গাপূজায় বিএনপি নেতাকর্মীদের সজাগ থাকতে হবে : টুকু Sep 26, 2025
img
ডোনাল্ড ট্রাম্প মধ্যস্থতা না করলে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ভয়াবহ রূপ নিতো: শেহবাজ শরীফ Sep 26, 2025
img

এশিয়া কাপ ২০২৫

অভিষেকের অর্ধশতকে শ্রীলঙ্কাকে ২০৩ রানের লক্ষ্য দিল ভারত Sep 26, 2025
টম ক্রুজের জন্য পাগল আমিশা, বললেন বিয়ে করতেও রাজি! Sep 26, 2025
ঘরোয়া ফুটবলে নতুন যুগের সূচনা, নাম বদলে ফিরছে উত্তেজনা Sep 26, 2025
img
অভ্যুত্থান কোনো একক দল করে নাই : জোনায়েদ সাকি Sep 26, 2025
img
জাতিসংঘে ইসরায়েলকে তুলোধুনো করলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী Sep 26, 2025
দুর্গাপূজায় এবার ৩৩ হাজার ৩৫৫ পূজামণ্ডপ: পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ Sep 26, 2025
img
জাতিসংঘের ৮০তম অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টার পূর্ণাঙ্গ ভাষণ Sep 26, 2025
img

জাতিসংঘে প্রধান উপদেষ্টা

রোহিঙ্গাদের প্রান্তিকীকরণের প্রক্রিয়া আর চলতে দেওয়া যাবে না Sep 26, 2025