পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে ইতিবাচক অগ্রগতির পরও যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের প্রতি কোনো ধরনের দাবি জানায়নি। তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে যদি কোনো দাবি আসে, সেটি আমরা দেশের স্বার্থ বিবেচনা করেই দেখব।’
শুক্রবার জিও নিউজের অনুষ্ঠান ‘আজ শাহব খানজাদা কে সাথ’-এ তিনি বলেন, যুদ্ধ পরিস্থিতি থেকে উদ্ভূত ঘটনাবলিই পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে নতুন ইতিবাচক মোড় এনেছে।
এ বক্তব্য এমন এক সময় এলো, যখন একদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ওয়াশিংটনের ওভাল অফিসে বৈঠক করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ট্রাম্পকে ‘শান্তির মানুষ’ আখ্যা দিয়ে তার প্রতি ‘গভীর শ্রদ্ধা’ প্রকাশ করেন এবং বিশ্বজুড়ে সংঘাত নিরসনে তার আন্তরিক প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
বৈঠকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমে পাকিস্তানের ভূমিকাকে প্রকাশ্যে সমর্থন করার জন্য ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান এবং গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা খাতে আরও সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
হোয়াইট হাউস থেকে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ, সেনাপ্রধান মুনির ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘনিষ্ঠ আলাপচারিতায় ব্যস্ত ছিলেন।
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সও উপস্থিত ছিলেন।
জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বিশেষভাবে ট্রাম্পের শান্তি প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। তিনি উল্লেখ করেন, গত মে মাসে পাকিস্তান-ভারতের চারদিনের সংঘর্ষের পর ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি হয়। সময়োপযোগী ও দৃঢ় পদক্ষেপ না নিলে দক্ষিণ এশিয়ায় ভয়াবহ যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় ‘অসাধারণ অবদানের’ স্বীকৃতি হিসেবে ইসলামাবাদ থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে।
গত কয়েক মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য উষ্ণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে চীনবিরোধী ভারসাম্য রক্ষায় ওয়াশিংটন ভারতের দিকে ঝুঁকে থাকলেও বর্তমানে ইসলামাবাদের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বেসামরিক ও সামরিক পর্যায়ের বৈঠক বেড়েছে।
সম্প্রতি বহুল আলোচিত বাণিজ্য চুক্তিও সই করেছে দুই দেশ। গত ৩১ জুলাই ঘোষিত চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানি পণ্যের ওপর ১৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। তবে এখনো ভারতের সঙ্গে এমন কোনো চুক্তি হয়নি।
এমআর/টিকে