‘অপরাধীদের জামিন’ প্রসঙ্গে বক্তব্যটি আইজিপির নয়, দাবি পুলিশ সদর দপ্তরের

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুলিশ মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) নামে একটি ফটোকার্ড প্রচার করা হয়েছে। ফটোকার্ডে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘গ্রেপ্তার বড় বড় অপরাধীরা দুই-তিন দিনের মধ্যে জামিনে বের হয়ে যায়, কীভাবে তা বোধগম্য নয়’।

বাস্তবে আইজিপি এমন কোনো মন্তব্য করেননি উল্লেখ করে ফটোকার্ডে প্রকাশিত জামিন সংক্রান্ত বক্তব্যটি আইজিপির নয় বলে দাবি করেছে পুলিশ সদর দপ্তর।

বুধবার (১ অক্টোবর) পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) এ এইস এম শাহাদাত হোসাইন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, ফটোকার্ডে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘গ্রেপ্তার বড় বড় অপরাধীরা দুই-তিন দিনের মধ্যে জামিনে বের হয়ে যায়, কীভাবে তা বোধগম্য নয়’। বাস্তবে আইজিপি এমন কোনো মন্তব্য করেননি। ৩০ সেপ্টেম্বর, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে অনুষ্ঠিত প্রেস কনফারেন্সে আইজিপির দেওয়া বক্তব্য বিকৃত করে ফটোকার্ডটি প্রস্তুত করা হয়েছে। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের মিডিয়া উইং এ ধরনের অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) পুলিশ সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ধারণ করা রেকর্ড পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, মোহাম্মদপুরে আপনারা দেখছেন যে সেখানে কিশোর গ্যাং এবং সন্ত্রাসীদের প্রচুর দৌরাত্ম রয়েছে এবং আপনাদের পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছে। শুধু মোহাম্মদপুর কেন্দ্রিক অনেক নিউজ হয়েছে। আপনারাও অনেক অভিযোগ তুলেছেন। এখনো সেখানে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ কিন্তু কমছে না। এই পরিস্থিতিতে শুধু এই একটা এলাকায় এখনো পুলিশ মানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে নাই, সেখানে এত বড় একটা নির্বাচন! আসলে সক্ষমতা আছে কিনা পুলিশের?

এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, অবশ্যই, সক্ষমতা অবশ্যই আছে। এটা নিয়ে আমার কোনো সন্দেহ নাই, আপনাদেরও কোন সন্দেহ না থাকুক, এটা আমি চাই।

মোহাম্মদপুরেরটা, ইটস এ ক্রাইম সিচুয়েশন। এখানে আমাদের বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে। আপনারা জানেন যে, আমরা মাঠে আমাদের বেসামরিক শক্তির সহায়তায় এখানে সামরিক বাহিনী আছে। আমরা তাদের সাহায্য নিয়েও মোহাম্মদপুরে আদাবর, বসিলা; এসব জায়গাতে আমরা চেষ্টা করছি। এদের কন্টেইন করতে।

এব্যাপারে আইজিপি বলেন, আমাদের একটা প্রধান, বড় অন্তরায় হচ্ছে যে, অনেক ক্রিমিনালও কিভাবে যেন গ্রেপ্তারের পরেও জামিন পেয়ে যায় এবং জামিনে এসে তারা আবার বিপুল উৎসাহে অপরাধ করা শুরু করে। মোহাম্মদপুরের যারা এই আপনারা যাদেরকে কিশোর গ্যাং বলেন, মানে অল্প বয়সী অপরাধী। তারা কি পরিমাণ গ্রেপ্তার করেছেন এবং তারপরে দেখা গেছে, সব আবার এলাকায় চলে এসেছে।

আইজিপি বলেন, এখন এগুলোকে কন্টেইন করার জন্য আমরা নানান কায়দা-কানুন করছি। এবং আমরা চেষ্টা করছি- কিছু কিছু ক্ষেত্রে হয়তো বা আমাদেরকে নিয়ন্ত্রণমূলক আটক আদেশও দিতে হতে পারে। কারণ আলটিমেটলি আমাদের পরিস্থিতি এমনভাবে বজায় রাখতে হবে, যাতে আমরা সেই মুক্ত, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে পারি। এটা আমাদের করতেই হবে, দরকার হলে আমরা আরও কঠোর পদক্ষেপে যাবো।

জামিন প্রসঙ্গে আরেক সাংবাদিক প্রশ্ন করে বলেন, আইনজীবী বা আইনজীবী নেতাদের সঙ্গে আপনারা কথা বলতে পারেন কিনা? কারণ তারা কিন্তু এখানে কন্ট্রাক্ট জামিন করেন। একই প্রসঙ্গে মোহাম্মদপুরের কিশোরের গ্যাংয়ের মূলনেতা আনোয়ারের কথা উল্লেখ করেন। আনোয়ার গ্রেপ্তারের মাত্র আড়াই মাসের মধ্যে জামিন হয়ে গেছে। অথচ তার বিরুদ্ধে ১৭/১৮ টা মামলা!

এমন প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, আসলে বিচারের, জাস্টিস সিস্টেমটা শুধু পুলিশের উপরে নির্ভর করে না, সেটা সবাই। বিচারক এজ ওয়েল এজ যারা প্রসিকিউটরস, যারা ডিফেন্সের সবাই মিলেই বিচারটা। এখানে আমার বিশ্বাস, সবাই এই এক উদ্দেশ্য নিয়ে, মানে ন্যায় বিচার যেন হয়, এক উদ্দেশ্য নিয়ে সবাই কাজ করবে। আমরা প্রসিকিউটরস যারা আছেন (পাবলিক প্রসিকিউটরস) তাদেরকে আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলবো। আমরা ইতোমধ্যে মাননীয় আইন উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা প্রসিকিউটরদের সঙ্গেও বসবো। আমরা আমাদের অসুবিধাগুলো তাদেরকে জানাবো।

কেএন/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
আদানিকে টপকে আবারও শীর্ষ ধনী মুকেশ আম্বানি Oct 01, 2025
img
ময়মনসিংহে বৃদ্ধের চুল কাটার ঘটনায় দু’জন গ্রেপ্তার Oct 01, 2025
img
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ফ্লোটিলার অভিযাত্রী হলেন ড. শহিদুল আলম Oct 01, 2025
img
তুরস্কের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়লেন বিমান বাহিনী প্রধান Oct 01, 2025
img
ম্যানইউতে জীবনের কঠিন সময় নিয়ে মুখ খুললেন গারনাচো Oct 01, 2025
সব জায়গায় জামায়াতের লোক বসাচ্ছে, এই সরকার তো জামায়াতের সরকার' Oct 01, 2025
img
ড. ইউনূসকে বিধ্বস্ত-ক্লান্ত লেগেছে, তার থামা প্রয়োজন : গোলাম মাওলা রনি Oct 01, 2025
তামিমসহ ১৫ ক্লাবের প্রার্থিতা প্রত্যাহার, বিসিবি নির্বাচনে অস্থিরতা Oct 01, 2025
img
বিসিবি নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হলেন যারা Oct 01, 2025
ওয়াশিংটন ক্ষমতায় থাকেননি, ড. ইউনূস কীভাবে ৫০ বছর থাকার কথা বলেন? Oct 01, 2025
মার্কিন হামলার আশঙ্কা, পালটা পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুত মাদুরো Oct 01, 2025
ইসরায়েলের ‘ডুবিয়ে দেওয়ার’ হুমকির মধ্যে গাজা অভিমুখে ফ্লোটিলা Oct 01, 2025
উপদেষ্টাদের আ.লীগ নেতৃত্ব গ্রহণের আহ্বান জানালেন রাশেদ খান Oct 01, 2025
হতাশার মুহূর্তে যীশুর পাশে অমিতাভ বচ্চন! Oct 01, 2025
ভাবনার মতে হারের ভেতর লুকিয়ে থাকে নতুন সম্ভাবনা Oct 01, 2025
নোংরামির সঙ্গে থাকব না, বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য কালো দাগ হয়ে গেল: তামিম Oct 01, 2025
img
জুবিন গার্গ আমাকে ফেমাস করেছেন : অনন্ত জলিল Oct 01, 2025
img
মার্শের ঝড়ে নিউজিল্যান্ডকে থমকে দিল অস্ট্রেলিয়া Oct 01, 2025
img
সাতক্ষীরায় বন্ধ হলো ইন্ডিয়ান ভিসা সেন্টার Oct 01, 2025
img
মাদকসহ বিমানবন্দরে আটক অভিনেতা Oct 01, 2025