সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম বলেছেন, ‘স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সিলেটে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ক্যান্সার হাসপাতাল তৈরি হবে, যাতে করে সিলেটের ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের ঢাকা কিংবা দেশের বাইরে যেতে না হয়।’
আগামী দু-এক মাসের মধ্যে জটিলতা কাটিয়ে সিলেট জেলা হাসপাতালের কার্যক্রমও শুরু হবে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুপুরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজে নির্মিতব্য ক্যান্সার ইউনিটের কাঠামোগত উন্নয়ন পরিদর্শনে আসেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলমসহ সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সিলেটের জেলা প্রশাসক। ডিসি মো. সরোয়ার আলম বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।’
গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধিদল হাসপাতাল পরিদর্শনে এসেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাদের মূল লক্ষ্য ছিল দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পরিদর্শন করা। ক্যান্সার হাসপাতালের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। তারা দেখতে এসেছেন কাজ কতদূর অগ্রসর হয়েছে এবং সম্পূর্ণ হতে আর কত সময় লাগবে। আমরা আশা করছি, আগামী ৩ মাসের মধ্যেই ক্যান্সার হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে।’ তিনি বলেন, ‘এই হাসপাতাল চালু হলে সিলেটসহ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের আর ঢাকায় বা দেশের বাইরে যেতে হবে না।
এ সময় তিনি ওসমানী হাসপাতালের কঠামোগত সমস্যা তুলে ধরে বলেন, ‘ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গঠনমূলক ও কাঠামোগত বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। এই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। চিকিৎসকদের বসার মতো উপযুক্ত জায়গাও নেই, যা খুবই দুঃখজনক। আমরা এই সমস্যাগুলোর সমাধানে কাজ করছি।’
প্রতিনিধিদল হাসপাতালের নতুন ভবনের কাজের অগ্রগতি দেখতে এসেছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘৫০০ শয্যার এই হাসপাতালে প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন হাজার রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। যা একটি বিশাল চাপ সৃষ্টি করছে। প্রতিনিধিদল মূলত নতুন ভবনের কাজের অগ্রগতি দেখতে এসেছেন। আশা করছি, আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে এই ভবনের কাজ সম্পন্ন হবে এবং রোগীদের সেখানে স্থানান্তর করা যাবে।’
জেলা হাসপাতালের কার্যক্রমও শিগগিরই চালু হবে জানিয়ে মো. সারওয়ার আলম বলেন, ‘আগামী এক থেকে দুই মাসের মধ্যেই সিলেট জেলা হাসপাতালের কার্যক্রম চালু হবে। এতে করে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগীর চাপ অনেকটাই কমে আসবে। এর ফলে চিকিৎসার মান আরো উন্নত হবে এবং চিকিৎসকরাও স্বস্তিতে কাজ করতে পারবেন।’
জেলা প্রশাসক জানান, ‘ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে দালালমুক্ত করতে ইতোমধ্যে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এখানকার চিকিৎসক ও নার্সরা অত্যন্ত আন্তরিকভাবে কাজ করছেন, কিন্তু অতিরিক্ত রোগীর চাপে সেবা ব্যাহত হচ্ছে। ৫০০ শয্যার জনবল থাকলেও রোগী সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার। তার সঙ্গে রোগীর স্বজনদের অতিরিক্ত ভিড় ব্যবস্থাপনা আরো জটিল করে তোলে। আমরা এই পরিস্থিতি পরিবর্তনের জন্য নিরলসভাবে কাজ করছি।’
এবি/টিকে