বিদেশ ভ্রমণ আমার অপছন্দ : প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, বিদেশ ভ্রমণ আমার অপছন্দ। অধিকাংশ মানুষই বিদেশ ভ্রমণ পছন্দ করে- হোক আশেপাশের দেশ কিংবা সমৃদ্ধ পশ্চিম। কিছু কারণে আমার বিদেশ ভ্রমণ ভালো লাগে না। শুধু সেখানকার জীবন কেমন দেখার জন্য আমি কখনো লন্ডন, নিউইয়র্ক, টোকিও, এমনকি বাড়ির কাছের কাঠমান্ডুর মতো শহরগুলো দেখার প্রয়োজন অনুভব করিনি।

শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।

পোস্টে প্রেস সচিব লেখেন, ২০১২ সালের নভেম্বরে আমি ২৭ দিনের একটি দীর্ঘ ভ্রমণ করি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচ শহরে। তখন আমি সল্টলেক শহরের মরমন চার্চের বাইরে অদ্ভুত সুন্দর তুষারপাত দেখি। একটি দিন কাটিয়েছি মোমাতে। নিউসিউম ও ওয়াশিংটন পোস্টে অর্ধেক দিন। ব্রডওয়েতে একটি মিউজিক্যাল শো দেখি প্রায় তিন ঘণ্টা। একটি পুরো দিন বাসে ভ্রমণ করে নিউইয়র্ক থেকে নায়াগ্রা জলপ্রপাত যাই। এখানেই আমার বিদেশ ভ্রমণ শেষ হতো কিন্তু তা হয়নি। আমার নতুন চাকরি আমাকে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশে আরও দুইবার নিয়ে গেছে। প্রতিবারই মনে হয়েছে বিদেশ ভ্রমণ আমার কাজ নয়।

‘আমার আত্মা অন্য কোথাও প্রথিত। আমি লালায়িত প্রাচীন বটগাছ, নদীর ঘাট, ঘুমন্ত গ্রামের মাটির সর্পিল রাস্তা, শান্ত অথচ চকচকে চায়ের দোকান আর বাংলার পথ ধরে দীর্ঘ, লক্ষ্যহীন যাত্রার জন্য…। আমার ভেতর প্রাচীন কিছু নাড়া দেয়-বটগাছ বা পুরাতন নদীর ঘাট দেখলেই। সেখানে আমি চুপচাপ বসে থাকতে চাই। কথা বলতে চাই একজন হিন্দু বিধবা বা একজন সুফির সাথে। কথা বলতে চাই মোবাইল ফোন ধরা একটি ছোট ছেলের সাথে অথবা ১৬ বছর বয়সী বিয়ে হওয়া একজন কিশোরী মায়ের সাথে। বাংলার বদ্বীপ এক রহস্যময় ভূমি। যতবার ঢাকার ফ্ল্যাট ছেড়ে গ্রামাঞ্চলে যাই ততবারই মনে হয় তীর্থযাত্রায় যাচ্ছি।’

তিনি আরও লেখেন, বিদেশের যে জায়গাগুলো দেখতে চাই তা হলো- ভারতীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ, মেঘালয়, আসাম ও ত্রিপুরার ছোট শহর। আমি আমাদের লোকদের সাথে দেখা করতে চাই যারা সেখানে বসতি স্থাপন করেছে। তারা কি এখনও একই আছে? তারা কি বট গাছের নিচে চুপ করে বসে থাকে? অথবা নদীর তীরে –আমার মতো? তারা কি চায়ের দোকানে লম্বা আড্ডায় দিন কাটায়? কি কথা বলে তারা -বাংলাদেশের কথা বললে? তাদের গ্রামগুলো কি এখনো সবুজ-প্রাচীনকালের মতো? তারা কি মনে করে যে তারা আমারই মতো প্রাচীন বাংলার বদ্বীপের সন্তান? অথবা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কিছু নদীর বংশধর?

কেএন/টিকে




Share this news on:

সর্বশেষ

img
জাতিসংঘ সফরে ৬ সাফল্যের কথা জানালেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব Oct 03, 2025
img
এবার মাশরাফিকে নিয়ে মুখ খুললেন ক্রীড়া উপদেষ্টা Oct 03, 2025
img
হামজাদের হংকং ম্যাচে কুয়েতের ৩ রেফারি Oct 03, 2025
img
আমরা অন্তত ১৬০টি আসন পাব: শিবির সেক্রেটারি Oct 03, 2025
img
‘গণভবন কখনোই সরকারিভাবে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ছিল না’ Oct 03, 2025
img
খাগড়াছড়িকে অশান্ত করার পেছনে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার ভারতের Oct 03, 2025
img
জাতিসংঘে সভাপতির পদে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করায় বাংলাদেশকে ফিলিস্তিনের কৃতজ্ঞতা Oct 03, 2025
img
ভারত সফর নিয়ে ভক্তদের উদ্দেশে মেসির বার্তা Oct 03, 2025
img
মানচিত্র থেকে মুছে দেব: ভারতীয় সেনাপ্রধান Oct 03, 2025
img
ফেসবুক পোস্টকে ঘিরে বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ, আহত ২৪ Oct 03, 2025
img
‘নির্বাচনে তামিমের অনুপস্থিতি পীড়া দিচ্ছে, সুষ্ঠু পরিবেশ প্রয়োজন’ Oct 03, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে দেশে ফিরছেন মির্জা ফখরুল Oct 03, 2025
img
আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত করলেন ডাকসু নেতারা Oct 03, 2025
img
আজ বিশ্ব হাসি দিবস Oct 03, 2025
img
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা থেকে অন্তত ২০ সাংবাদিককে গ্রেপ্তার: আরএসএফ Oct 03, 2025
img
গাজার অভিমুখে নতুন ১১ জাহাজের যাত্রা, দেখা যাবে লাইভ ট্র্যাকারে Oct 03, 2025
img
আসিফ মাহমুদ লোভী, মাহফুজ আলম হিপোক্রেট না : মাসুদ কামাল Oct 03, 2025
img
পানির সঠিক উৎপাদন-সিস্টেম লস নির্ধারণে ঢাকা ওয়াসার কমিটি Oct 03, 2025
img
টানা জয়ের পর হোঁচট খেল চট্টগ্রাম, রংপুরে নাসিরের অলরাউন্ড দাপট Oct 03, 2025
img
যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের প্রস্তাবকে হুমকি হিসেবে দেখছেন মাহাথির Oct 03, 2025