কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ার পর আজ সকাল থেকে উজ্জ্বল রোদে আলোকিত হয়েছে ‘সাগরকন্যা’ কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত। বৈরী আবহাওয়া কেটে গিয়ে এমন আবহাওয়ায় পর্যটকরা দলে দলে ভিড় জমাচ্ছেন কুয়াকাটা। শারদীয় দুর্গাপূজার সরকারি চার দিনের ছুটিকে কেন্দ্র করে পর্যটকে টইটুম্বর কুয়াকাটা। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আগত পর্যটকদের ভ্রমণে কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সকালে সূর্যোদয় দেখা থেকে শুরু করে বিকেলে সূর্যাস্ত অবলোকন—সবকিছুতেই পর্যটকদের চোখে-মুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের ঝিলিক। অনেকে সমুদ্রজলে অবগাহন করছেন, কেউবা দল বেঁধে বালুচরে ছবি তুলছেন, আবার কেউ কুয়াকাটার আশেপাশের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখছেন।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম. এ মোতালেব শরীফ বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে কিছুদিন পর্যটকের সংখ্যা কমলেও এখন আবার বেড়েছে বুকিং ও ভিড়। শারদীয় দুর্গাপূজার টানা চার দিনের ছুটিতে কুয়াকাটায় ব্যাপক পর্যটকদের সমাগম হয়েছে। তবে হঠাৎ আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় আগত পর্যটকরা এবং পর্যটক নির্ভর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা হতাশায় পরেছিলেন। কিন্তু আজ সকাল থেকে বৈরী আবহাওয়া কেটে যাওয়ায়, স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন আগত পর্যটকরা।
ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে আসা পর্যটক সোহেল সিকদার বলেন, শুনেছিলাম আবহাওয়া খারাপ, কিন্তু আজকের এই রোদেলা দিন আমাদের সব দুশ্চিন্তা ভুলিয়ে দিয়েছে। কুয়াকাটা তো অসাধারণ সুন্দর। একসপ্তাহ আগে হোটেল বুকড দিয়েছি কুয়াকাটায় কিন্তু আবহাওয়া খারাপের কথা শুনে একটু টেনশনে পরে গিয়েছিলাম। তবে কুয়াকাটায় পৌছিয়ে দেখি আবহাওয়া ঠিক হয়ে গেছে।
ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম রেজা বলেন, আমরা যারা পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় ট্যুর গাইড হিসেবে আগত পর্যটকদের সেবা দিয়ে থাকি তারা সব সময় অপেক্ষায় থাকি পর্যটকদের। কিন্তু যখন আবহাওয়া খারাপ থাকে তখন কুয়াকাটা দর্শনীয় স্থানগুলোতে পর্যটকদের নিয়ে যাওয়া যায় না। তখন আমরা মারাত্মকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হই। বৃহস্পতিবার আমাদের অধিকাংশ ট্যুর গাইড সদস্য পর্যটক থাকা সত্ত্বেও অলস সময় পার করেছেন। শুধু বৈরী আবহাওয়ার জন্য। তবে আজকে আবহাওয়া ভালো থাকায় সবাই কর্মব্যস্ত রয়েছেন।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ রিজিওনের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত টহল ও নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। সমুদ্রসৈকতে উদ্ধারকারী দলও প্রস্তুত রাখা হয়েছে যে কোনো জরুরি পরিস্থিতির জন্য।
পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী বলেন, বঙ্গোপসাগরের সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি দুর্বল হয় ভারতের উড়িশা হয়ে উঠে গেছে। তবে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সব সমুদ্রবন্দরগুলোকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
আইকে/টিকে