হু হু করে বাড়ছে তিস্তার পানি, আতঙ্কে স্থানীয়রা

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর টানা বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নীলফামারী, লালমনিরহাট ও রংপুরের তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে দেখা দিয়েছে বন্যার আশঙ্কা। নদীর পানি দ্রুত বাড়তে থাকায় তীরবর্তী এলাকার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন।

রোববার (৫ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে নদীর পানি রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার, যা বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপরে। পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা ব্যারাজের সব ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

পাউবোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারতের দার্জিলিং ও কালিম্পং অঞ্চলে টানা ভারী বৃষ্টির কারণে পাহাড়ি ঢল নেমে আসছে। ফলে তিস্তার পানি হু হু করে বাড়ছে। এতে ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিসা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী ও গয়াবাড়ী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।

স্থানীয়রা বলছেন, তিস্তার পানি যেভাবে বাড়ছে, তাতে রাতে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

স্থানীয় বাসিন্দা হাসানুর রহমান বলেন, বিকেলে তেমন পানি ছিল না। সন্ধ্যার পর হঠাৎ পানি বাড়তে শুরু করে। এখন পুরো ঘর ডুবে গেছে। জিনিসপত্র নিয়ে নিরাপদ স্থানে যাচ্ছি।

আরেক বাসিন্দা মনোয়ার হোসেন বলেন, তিস্তার পানি ঘরে ঢুকে গেছে। আমরা যা পারছি, বাচ্চা ও জিনিসপত্র নিয়ে বাইরে যাচ্ছি। সবকিছু ডুবে যাচ্ছে চোখের সামনে।

পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টির কারণে কয়েকটি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ এখন পানিবন্দী। রাতে পানি আরও বাড়তে পারে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, সন্ধ্যার পর থেকে তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। রাতে তা আরও বেড়ে ৩০ সেন্টিমিটার ওপরে পৌঁছেছে। পরিস্থিতি নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরানুজ্জামান বলেন, তিস্তার পানি বেড়ে একটি বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছিল। সেটি মেরামত করা হয়েছে। তবে পানি বেড়ে অনেকের ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী মানুষদের নিরাপদ স্থানে নেওয়া ও শুকনো খাবার বিতরণের কাজ চলছে।

 পিএ/টিকে 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
নির্বাচনের ফাঁকা মাঠে একাই খেলছে জামায়াত : মোস্তফা ফিরোজ Oct 06, 2025
img
সিরিজ শুরুর আগেই তিনে ব্যাটিংয়ের পরিকল্পনা পেয়েছিলেন সাইফ Oct 06, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা শেষে ফিরতে হতে পারে অধিকাংশ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে Oct 06, 2025
img
সার উৎপাদনে গ্যাসের দাম বাড়ানোর গণশুনানি আজ Oct 06, 2025
img
জামায়াত ক্ষমতায় এলে মুসলমান হতে সার্টিফিকেট নিতে হবে : সোহেল Oct 06, 2025
img
হু হু করে বাড়ছে তিস্তার পানি, আতঙ্কে স্থানীয়রা Oct 06, 2025
জুলাই সনদ গণভোটের সময় নিয়ে দ্বন্দ্ব বিএনপি-জামায়াত মতভেদ Oct 06, 2025
শহিদুল আলম জানালেন, গাজায় পৌঁছাতে কত সময় লাগবে Oct 06, 2025
আফরোজা আব্বাসকে পরিচালনা পর্ষদে নিতে ৩.১৩ কোটি শেয়ার উপহার Oct 06, 2025
গণভোটের পক্ষে একমত সব রাজনৈতিক দল Oct 06, 2025
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নতুন নির্দেশনা, মাঠে নজরদারি শক্তিশালী Oct 06, 2025
লুইস-বিএনপি বৈঠকে হুমায়ুন কবিরকে সিলেটের প্রার্থী ঘোষণা Oct 06, 2025
img
আফগান এশিয়ার দ্বিতীয় সেরা দল নয়, স্বীকার করলেন ট্রট Oct 06, 2025
'গণ অধিকার পরিষদে একজন শুধুমাত্র নেতৃত্ব ছিলাম না, আমি একধরনের ডোনারও ছিলাম' Oct 06, 2025
img
ফৌজদারি মামলায় যুক্তরাজ্য যুবলীগ নেতা কয়ছর আহমদ গ্রেপ্তার Oct 06, 2025
img
আফগানদের হোয়াইটওয়াশ করল টাইগাররা Oct 06, 2025
img
হামজার তিন আর সামিতের এক সেশন নিয়ে মন্তব্য ক্যাবরেরার Oct 05, 2025
img
অনিয়মিত অভিবাসন ঠেকাতে ইইউ নেতাদের নতুন পদক্ষেপের ঘোষণা Oct 05, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের হুঁশিয়ারি পুতিনের Oct 05, 2025
img
লাইফ সাপোর্টে অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম Oct 05, 2025