ঢাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং অপরাধ দমনে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছে ঢাকা জেলা প্রশাসন। ফৌজদারি কার্যবিধির ১১০ ধারার আলোকে কুখ্যাত ও অভ্যাসগত অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে বিধানটি প্রয়োগ করবে জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে সমাজে হুমকিস্বরূপ এমন ব্যক্তিদের তথ্য দেওয়ার জন্য সর্বসাধারণের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। তথ্য প্রদানকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে বলেও জেলা প্রশাসন থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে।
রোববার (৫ অক্টোবর) জেলা প্রশাসনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি ঢাকা জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে প্রকাশিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কুখ্যাত এবং অভ্যাসগত অপরাধীদের অপরাধ থেকে বিরত রাখার জন্য ফৌজদারি কার্যবিধির ১১০ ধারায় বিধান রয়েছে। কিন্তু বিধানটির প্রয়োগ সচরাচর কম দেখা যায়। অপরাধ প্রতিরোধে প্রয়োজনে এই বিধানের কার্যকর প্রয়োগ করা হবে। এই উদ্যোগকে সফল করতে জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ চেয়েছে জেলা প্রশাসন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আপনাদের কাছে যদি এলাকার কুখ্যাত এবং অভ্যাসগত অপরাধীদের বিষয়ে তথ্য থাকে, যাদের শান্তিরক্ষার মুচলেকায় আবদ্ধ করে রাখলে সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলার জন্য তা সহায়ক হবে, সেই সব ব্যক্তির নাম, ঠিকানা এবং সংঘটিত বিভিন্ন অনিয়ম-অন্যায়ের তথ্যসহ জেলা প্রশাসক অথবা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে জানানোর অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
ফৌজদারি কার্যবিধির ১১০ ধারা একটি প্রতিরোধমূলক আইন। এই ধারার মূল উদ্দেশ্য হলো, অভ্যাসগত অপরাধীদের কোনো নির্দিষ্ট অপরাধের জন্য শাস্তি না দিয়ে, বরং ভবিষ্যতে যেন তারা কোনো অপরাধ করতে না পারে, সে জন্য তাদের কাছ থেকে ভালো আচরণের মুচলেকা নেওয়া। এই ধারার অধীনে অভ্যাসগত চোর, ডাকাত, দস্যু, অপহরণকারী, চাঁদাবাজ এবং সমাজে ত্রাস সৃষ্টিকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। ম্যাজিস্ট্রেট উপযুক্ত প্রমাণসাপেক্ষে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে এক বছরের জন্য শান্তিরক্ষার মুচলেকা প্রদানের আদেশ দিতে পারেন।
অনেক সময় নির্দিষ্ট প্রমাণের অভাবে বড় অপরাধী বা এলাকার ত্রাস সৃষ্টিকারীরা আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে যায়। কিন্তু এলাকাবাসী তাদের অপকর্ম সম্পর্কে অবগত থাকে। ১১০ ধারার প্রয়োগের মাধ্যমে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ বা অভ্যাসগত অপরাধীদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। এটি অনেকটা প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধের নীতিতে কাজ করবে। জেলা প্রশাসনের এ উদ্যোগের সাধুবাদ জানিয়েছেন নগরীর বিশিষ্টজনরা। সাধারণ মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই কার্যক্রম সফল হলে ঢাকার অপরাধ প্রবণতা অনেকাংশে হ্রাস পাবে এবং নগরবাসীর নিরাপত্তা আরও জোরদার হবে।
টিজে/টিকে