বড় বড় শহরে প্লট দেয়া বন্ধ করা উচিত বলে মনে করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
সোমবার (৬ অক্টোবর) রাজধানীর চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিশ্ব বসতি দিবস ২০২৫- এর আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, রাষ্ট্রের মৌলিক অধিকারের মধ্যে আমরা বসতিকে কিভাবে অন্তর্ভুক্ত করবো, এটির একটা পরিকল্পনা প্রয়োজন। একজন ৬টা থেকে ৭টা প্লটের মালিক, অন্যদিকে একজন মধ্যবিত্ত কী করছে! তাই বসতিকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া দরকার।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ঢাকাকেন্দ্রিক বা বড় বড় শহরে প্লট দেয়া বন্ধ করা উচিত বরং ফ্ল্যাটকেন্দ্রিক হওয়া উচিত। একটা প্লট পেলে খুশি হই, একটা ফ্ল্যাট পেলে খুশি হই না! এ ছাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প যাদের দেয়া হয়েছে তারা কিন্তু যায় না। কারণ শুধু আশ্রয় দিয়ে হয় না, আনুষঙ্গিক অনেক কিছু লাগে।
‘প্রাকৃতিকভাবে যে আলো লাগে, বিল্ডিংটা ঐভাবে তৈরি করলে কৃত্রিম আলো লাগে না। আলো এমনিতেই আসে। তাই আমাদের একটা মডেল তৈরি করা উচিত, একটা বিল্ডিংয়ে কী কী পরিবেশবান্ধব ম্যাটেরিয়্যাল তৈরি করা হবে। কী কী ধরনের লাইট ব্যবহার হবে’, যোগ করেন পরিবেশ উপদেষ্টা।
তিনি আরও বলেন, ফ্ল্যাটের পাশাপাশি দুর্যোগ সহনশীল বসতির কথা ভাবতে হবে। বন্যা, নদীভাঙন অঞ্চলে এসব বসতির কথা ভাবা জরুরি হয়ে পড়েছে যা টেকসই হবে, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় সহনশীল হবে। বিকেন্দ্রিকরণ, পার্টনারশিপ, সবুজায়ন, দুর্যোগ সহনশীলতার মাধ্যমে আমরা নিরাপদ বসতি গড়তে পারি।
বস্তি কোনো বসতি না উল্লেখ করে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন নিতান্ত বাধ্য না হলে কেউ বস্তিতে থাকে না। বস্তিবাসীর পুনর্বাসন না করে মানুষ যেন বস্তিবাসীর শরণাপন্ন না হয়, সেভাবে মেন্ডেট হতে হবে।
অনুষ্ঠানে গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, পরিকল্পিত নগরায়ন শুধু কাঠামোগত উন্নয়ন নয়, এটি মানুষের জীবনমান উন্নয়নের চাবিকাঠি।
নগর পরিকল্পনা করতে গেলে বেশ কিছু জায়গায় জোর দিতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, পরিকল্পিত বাসযোগ্য নগর গড়ে তুলতে হলে ভূমির সুষ্ঠু ব্যবহার, অবকাঠামো উন্নয়ন, নদী ও খাল রক্ষা করতে হবে। অপরিকল্পিত নগরায়ন দেশের মানুষের জীবনমানের অবনতি ঘটাচ্ছে। সমন্বিতভাবে এবং পরিকল্পিতভাবে বসতি গড়ে তোলার চিন্তা করতে হবে।
কেএন/টিকে