বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে তুরস্কের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠীগুলো। গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) তুরস্কের ইস্তাম্বুলে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা) আয়োজিত উচ্চপর্যায়ের বিনিয়োগ সেমিনার ‘গেটওয়ে টু গ্রোথ: ইনভেস্ট ইন বাংলাদেশ’-এ তারা এ আগ্রহের কথা জানায়।
বিষয়টি বিডার জনসংযোগ দপ্তরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইস্তাম্বুলের ডেল্টা হোটেলস বাই ম্যারিয়ট, লেভেন্ট-এ আয়োজিত সেমিনারে ৩০টিরও বেশি তুর্কি কোম্পানি অংশ নেয়—যাদের কেউ ইতোমধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছে, আবার কেউ নতুন বিনিয়োগের সম্ভাবনা খুঁজছে। এই আয়োজনটি বিডা, ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপের কারিগরি সহায়তায়, তুরস্কে বাংলাদেশের দূতাবাস ও ইন্ডিপেনডেন্ট ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্টস অ্যান্ড বিজনেসম্যানস অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিডার ব্যবসা উন্নয়ন বিভাগের প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য এখনই সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। রপ্তানি প্রবৃদ্ধি, মুদ্রার স্থিতিশীলতা ও নিয়ন্ত্রিত মূল্যস্ফীতির মতো সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচকগুলো বর্তমানে বেশ অনুকূল অবস্থায় রয়েছে। সরকার ইতোমধ্যে ব্যবসা সহজীকরণের লক্ষ্যে ৩২টি সংস্কার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
তিনি আরও জানান, নতুন বিনিয়োগকারীদের সহায়তায় বিডা তার ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিনিয়োগ পরামর্শ থেকে শুরু করে কারখানা স্থাপন পর্যন্ত পূর্ণ সহযোগিতা প্রদান করছে।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। তিনি তুরস্কের শীর্ষ শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করেন এবং আগ্রহী বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনাকারী তুর্কি কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিরাও তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। আরসেলিক কোম্পানির সিইও বারিশ আলপার্সলান বলেন, আমরা বাংলাদেশের স্থানীয় সরবরাহ চেইনকে শক্তিশালী করতে, দক্ষ জনবল তৈরি করতে এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে বিনিয়োগে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এছাড়া আয়গেজ কোম্পানির এজিএম এরজুমেন্ট পোলাত জানান, বিডার ওয়ান স্টপ সার্ভিসের সহায়তায় আমরা দ্রুত সম্প্রসারণ করতে সক্ষম হয়েছি। বর্তমানে বাংলাদেশে আমাদের দুই শতাধিক কর্মী কাজ করছেন এবং আমাদের বিতরণ নেটওয়ার্ক প্রায় ৩০ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে।
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন- মুসাইএদ-এর বোর্ড সদস্য মুহাম্মেত হুজেইফে গুল্লুওগ্লু এবং ইস্তাম্বুলে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। তারা দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীর নেতৃত্বে সেমিনারে বিডা, বেজা, এনবিআর এবং ব্যাংক খাতের শীর্ষ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ৭–৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত গভর্নমেন্ট-টু-বিজনেস (জিটুজি) বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল তুরস্কের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাতে সম্ভাব্য বিনিয়োগ ও অংশীদারত্ব নিয়ে আলোচনা করেছে। একইসঙ্গে বিডা তুরস্কের অন্যতম প্রধান শিল্প সংগঠন তুর্ক অন ফিড-এর সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতা গড়ে তুলছে, যা দুই দেশের সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বকে আরও জোরদার করবে।
ইএ/এসএন