সাহিত্যিক ও এমিরেটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামকে রাজধানীর মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে। শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
এর আগে বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার সামনে এবং ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাবেক এই শিক্ষক, সাহিত্যিকের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান সর্বস্তরের মানুষ।
উল্লেখ্য, রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার বিকেলে ৫টার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম গত ৩ অক্টোবর হৃদরোগে আক্রান্ত হলে নেয়া হয় ল্যাবএইড হাসপাতালে। সেখানে ভর্তির পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে রাতেই তার হার্টে দুইটি রিং পরানো হয়। গত ৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় অবস্থা ‘সংকটাপন্ন’ হলে তাকে ভেন্টিলেশন সাপোর্টে নেয়া হয়।
অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে ‘ভেন্টিলেশন সাপোর্ট’- ছাড়াই স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে পারছিলেন তিনি। গতকাল অবস্থার অবনতি হওয়ায় ফের তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। বিকাল ৫টার দিকে লাইফ সাপোর্ট খুলে দিলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের জন্ম ১৯৫১ সালের ১৮ জানুয়ারি সিলেটে।
তার বাবার নাম সৈয়দ আমীরুল ইসলাম, মা রাবেয়া খাতুন। সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৬ সালে মাধ্যমিক পাস করেন তিনি। সিলেট এমসি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে। সেখান থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন। ১৯৮১ সালে কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইয়েটস-এর কবিতায় ইমানুয়েল সুইডেনবার্গের দর্শনের প্রভাব বিষয়ে পিএইচডি করেন।
দেশে ফিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে শিক্ষকতায় যোগ যেন।
২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে অবসরের পর যোগ দেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশে। ২০২৩ সালে তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক করা হয়। ১৯৯৬ সালে তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার এবং ২০১৮ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন। প্রবন্ধ, গল্প, উপন্যাস, নন্দনতত্ত্ব ও গবেষণাধর্মী তার অনেক বই রয়েছে। উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে আছে- পুস্তক প্রকাশনা ও সম্পাদনা প্রসঙ্গ, থাকা না থাকার গল্প, কাঁচ ভাঙ্গা রাতের গল্প, অন্ধকার ও আলো দেখার গল্প, আধখানা মানুষ্য, দিনরাত্রিগুলি, আজগুবি রাত, তিন পর্বের জীবন, নন্দনতত্ত্ব, কতিপয় প্রবন্ধ ও অলস দিনের হাওয়া।
আইকে/টিকে