জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া অভিযোগ করেছেন, তথাকথিত মাদকবিরোধী অভিযানের আড়ালে যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলায় একটি অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্র করছে। তিনি এই মার্কিন সামরিক অভিযানকে আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে নিন্দা জানিয়েছেন।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি অধিবেশনে রুশ রাষ্ট্রদূত বলেন, "আমরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের সরকারের ওপর রাজনৈতিক, সামরিক এবং মানসিক চাপের এক নির্লজ্জ অভিযান প্রত্যক্ষ করছি - যার একমাত্র উদ্দেশ্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিকূল একটি শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন করা।"
জানা গেছে, ইতোমধ্যে ভেনেজুয়েলার উপকূলে যুক্তরাষ্ট্র মেরিন এবং যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে। মাদক চোরাচালানের অভিযোগে জাহাজগুলোতে বিমান হামলা চালানো হয়েছে, যাতে কমপক্ষে চারটি নৌকা ডুবে গিয়ে ২১ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
ভেনেজুয়েলা এই পদক্ষেপকে সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন বলে নিন্দা জানিয়েছে এবং অবিলম্বে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি অধিবেশন আহ্বান করেছে। তারা সতর্ক করে দিয়েছে, এই অভিযান প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে উৎখাত করার লক্ষ্যে এবং আঞ্চলিক শান্তির জন্য হুমকি।
নেবেনজিয়া মার্কিন সামরিক পদক্ষেপের ন্যায্যতাকে 'হলিউডের ব্লকবাস্টারের নিখুঁত প্লট' বলে উপহাস করেন, যা বাস্তবে 'সম্পূর্ণ কল্পকাহিনী'। তিনি যুক্তি দেন যে জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ বিষয়ক অফিস ভেনেজুয়েলাকে মাদক পাচারের কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করে না, কারণ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারী কোকেনের ৮৭ শতাংশ প্রশান্ত মহাসাগর দিয়ে আসে।
রুশ দূত ওয়াশিংটনের প্রতি অবিলম্বে উত্তেজনা বৃদ্ধি বন্ধ করতে এবং ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের 'অপূরণীয় ভুল' এড়াতে আহ্বান জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, মার্কিন রাজনৈতিক পরামর্শদাতা জন কেলি জোর দিয়ে বলেছেন, ভেনেজুয়েলার তথাকথিত 'মাদক চক্র' নির্মূল করতে ওয়াশিংটন তার 'পূর্ণ শক্তি' ব্যবহার করবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন দীর্ঘদিন ধরে মাদুরোকে 'মাদক সন্ত্রাসী' হিসেবে আখ্যা দিয়ে তাকে ধরিয়ে দিতে ৫০ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করে রেখেছে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে মাদুরোর পুনর্নির্বাচনকে ট্রাম্প প্রশাসন স্বীকৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং গতকালই ট্রাম্প বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদোকে নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন। নিরাপত্তা পরিষদের অন্যান্য সদস্যরাও এই অঞ্চলে উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
আইকে/টিকে