ময়মনসিংহের পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা আজ সোমবার থেকে শর্তহীনভাবে বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগ নেতার মালিকানাধীন ১৬টি বাস তাঁরা চলতে দেবেন না।
রবিবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পৌনে ৯টা পর্যন্ত এনসিপি নেতা, পরিবহন শ্রমিক ও মালিকপক্ষের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের সম্মেলনকক্ষে প্রশাসন কর্মকর্তাদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার পর ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী আখতার উল আলম গণমাধ্যমকে জানান, শর্তহীনভাবে বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা।
দুই পক্ষের দাবির বিষয়ে পরে পদক্ষেপ নেওয়া যাবে। যে শ্রমিকের বিরুদ্ধে এনসিপির অভিযাগ ছিল, সেই শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ময়মনসিংহ জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি আলমগীর মাহমুদ আলমও বলেছেন, জেলা প্রশাসন দুই পক্ষকে নিয়ে সভায় বসেছিল। সভায় শর্তহীনভাবে সোমবার সকাল থেকে সব রুটে বাস চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জানা গেছে, এনসিপির হালুয়াঘাট উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী ও জুলাই যোদ্ধা আবু রায়হানকে ইউনাইটেড পরিবহনের একজন শ্রমিক লাঞ্ছিত করেছেন-এই অভিযোগ তোলা হয়। পরে এনসিপির নেতাকর্মীরা ময়মনসিংহের মাসকান্দা বাস টার্মিনালে গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে অবস্থান নেন। অন্যদিকে এনসিপি নেতাকর্মীদের এই অবস্থান কর্মসূচি ও একজন শ্রমিককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার প্রতিবাদ করতে থাকেন পরিবহন শ্রমিকরা। তাঁরা গত শনিবার দুপুর ১২টা থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দীঘারকান্দা বাইপাসে বিক্ষোভ শুরু করেন।
তাতে সব পথে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। চরম ভোগান্তিতে পড়ে হাজারো যাত্রী। এ অবস্থায় গত শনিবার বিকেলে জেলা প্রশাসন শ্রমিক ও এনসিপি-উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসে।
এনসিপি নেতারা বলেন, ইউনাইটেড পরিবহন কম্পানিতে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আমিনুল হকের (শামীম) ১৬টি গাড়ি বন্ধ করে দিতে হবে। এই দাবি মানার আশ্বাসে এনসিপির নেতারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।
পরিবহন শ্রমিকরাও অবস্থান থেকে সরে দাঁড়ান। ওই দিন বিকেল ৫টা থেকে ইউনাইটেড পরিবহনের ৭০টি ও শৌখিন এক্সপ্রেসের ১৫০টি বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। গতকাল রবিবার সকাল থেকে ঢাকাগামী সব ধরনের বাস ও ময়মনসিংহ থেকে জেলার ভেতরের বিভিন্ন পথে সব বাস বন্ধ রাখেন পরিবহন শ্রমিক ও মালিকরা। তবে শেষ পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শর্তহীনভাবে বাস চালানোর ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা।
টিজে/টিকে