বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত জার্মানির নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লোটজ।
গতকাল রবিবার সকাল ৯টায় রাজধানীতে জামায়াত আমিরের কার্যালয়ে এই সাক্ষাৎ ও প্রাতরাশ বৈঠক হয়। এতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্যভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে জার্মানির সহযোগিতা ও কারিগরি সহায়তা কামনা করে জামায়াত। রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ছিলেন দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন আনজা কারস্টেন এবং পলিটিক্যাল ও প্রেস অফিসার শারলিনা নুজহাত কবির।
জামায়াত আমিরের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, আমিরের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান এবং ঢাকা মহানগর উত্তরের মেডিক্যাল থানা জামায়াতের আমির ডা. এস এম খালিদুজ্জামান।
দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আলোচনার শুরুতে রাষ্ট্রদূত জামায়াত আমিরের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন এবং তাঁর দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
বৈঠকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। একই সঙ্গে বাংলাদেশের নারীসমাজের অধিকার সুরক্ষা, কর্মক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সার্বিক উন্নয়নে জার্মানির অব্যাহত সমর্থনের প্রত্যাশা জানানো হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, টেকসই গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো আরো শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা হয়। উভয় পক্ষ ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ও জার্মানির মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরো জোরদার হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে।
এদিকে গতকাল সকালে নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের প্ররোচনায় প্রতিপক্ষ নিধনের এজেন্ডা বাস্তবায়নে সেনাবাহিনীর কতিপয় কর্মকর্তা অন্ধভাবে সহযোগিতা করেছেন। এ কারণে দেশে গুম ও খুনের ভয়াবহ পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, যা জাতির জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’
তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যেসব কর্মকর্তা খুনের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সেনাবাহিনী নিয়ে জনগণ গর্বিত থাকতে চায়। তবে কিছু সদস্য মানবাধিকার ও দেশের আইনকে সম্মান করতে ব্যর্থ হয়েছেন।’
জামায়াত আমির বলেন, ‘কয়েকজনের অপরাধের কারণে পুরো প্রতিষ্ঠানকে কলঙ্কিত হতে দেওয়া যায় না। অপরাধের দায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ওপরই বর্তাবে।’
তিনি জানান, সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বিচারপ্রক্রিয়ায় সহযোগিতার ঘোষণা এসেছে এবং অভিযুক্তদের বাহিনীর হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ‘আমরা সেনাবাহিনীর এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই,’ বলেন তিনি।
জামায়াত আমির আশা প্রকাশ করেন, ‘করো প্রতি অবিচার করা হবে না। স্বচ্ছ বিচারপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। এতে যেমন অতীতের দায় থেকে জাতি মুক্তি পাবে, তেমনি ভবিষ্যতে কেউ পেশাগত পরিচয় ব্যবহার করে জনস্বার্থের ক্ষতিসাধনে উৎসাহী হবে না।’
টিজে/টিকে