নরওয়ের রাজধানী অসলোতে অবস্থিত তাদের দূতাবাস বন্ধ করে দিয়েছে বলে ভেনেজুয়েলা সোমবার ঘোষণা করেছে। দেশটির বিরোধী নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হওয়ার পরেই এমন ঘোষণা এলো।
সরকারি বিবৃতিতে ভেনেজুয়েলা জানিয়েছে, এই পদক্ষেপ তাদের বিদেশি সেবা কাঠামো পুনর্গঠনের অংশ। যদিও মাচাদোর নোবেলপ্রাপ্তি নিয়ে কারাকাস কোনো মন্তব্য করেনি।
একই সঙ্গে দেশটি অস্ট্রেলিয়াতেও তাদের দূতাবাস বন্ধ করেছে, তবে জিম্বাবুয়ে ও বুরকিনা ফাসোতে নতুন কূটনৈতিক মিশন খুলেছে।
সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই দুই দেশকে ভেনেজুয়েলা ‘আধিপত্যবাদী চাপের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কৌশলগত অংশীদার’ হিসেবে বিবেচনা করে।
নরওয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার নিশ্চিত করেছে, ভেনেজুয়েলা কোনো কারণ না জানিয়ে অসলো দূতাবাস বন্ধ করেছে। পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র সিসিলি রোয়াং এএফপিকে পাঠানো এক ই-মেইলে বলেন, ‘এটি দুঃখজনক।
যদিও অনেক বিষয়ে আমাদের মতপার্থক্য রয়েছে, নরওয়ে ভেনেজুয়েলার সঙ্গে সংলাপ খোলা রাখতে চায় এবং সেই লক্ষ্যেই কাজ চালিয়ে যাবে।’
সোমবার সন্ধ্যা নাগাদ অসলোতে ভেনেজুয়েলার দূতাবাসের টেলিফোন সেবা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই পদক্ষেপ আসে মাচাদোর নোবেল পুরস্কার ঘোষণার মাত্র তিন দিন পর। তিনি ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন, যেখানে বর্তমান প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
যদিও বিরোধী দল সেই ফলাফলকে জালিয়াতি বলে বিক্ষোভ জানিয়েছিল। গত রবিবার মাদুরো মাচাদোর নোবেল জয়ের বিষয়ে সরাসরি কিছু না বললেও তাকে ‘দানবীয় ডাইনি’ বলে উল্লেখ করেন— যা সরকারের প্রচলিত অপমানসূচক শব্দগুলোর একটি।
নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান ইয়র্গেন ভাটনে ফ্রিডনেস ওসলোতে বলেন, ‘মারিয়া কোরিনা মাচাদোকে সম্মানিত করা হয়েছে ভেনেজুয়েলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় তার নিরলস কাজের জন্য এবং স্বৈরাচার থেকে গণতন্ত্রে ন্যায়সংগত ও শান্তিপূর্ণ রূপান্তরের সংগ্রামের কারণে।’
নরওয়ের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র রোয়াং স্পষ্ট করে বলেন, ‘নোবেল পুরস্কার নরওয়েজীয় সরকারের সম্পূর্ণ স্বাধীন একটি প্রতিষ্ঠান।’ পুরস্কারপ্রাপ্তির পর মাচাদো এই নোবেল উৎসর্গ করেন ‘ভেনেজুয়েলার ভোগান্তিতে থাকা জনগণের প্রতি’ এবং একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।
তাকে তাদের ‘সংগ্রামে দৃঢ় সমর্থন’ তিনি উল্লেখ করেন।
সোমবার রাতে মাচাদো কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটায় দুই ভেনেজুয়েলীয় কর্মীর ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনার তদন্তের দাবি জানান। পুলিশ জানায়, আহত দুজনের নাম লুইস আলেহান্দ্রো পেচে ও ইয়েনদ্রি ভেলাসকেজ, যারা বাসে উঠতে যাচ্ছিলেন, তখনই তাদের গুলি করা হয়। মাচাদো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লেখেন, ‘তারা নিকোলাস মাদুরোর স্বৈরতন্ত্রের জন্য নিপীড়িত।’
টিজে/টিকে