গাজায় নারীসহ প্রাণ হারান আরো ১১ জন

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় একই পরিবারের ১১ সদস্য নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে সাত শিশু ও তিনজন নারী। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার মাত্র আট দিন পরই ভয়াবহভাবে এই চুক্তি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটল।

রোববার (১৯ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
গাজার সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ জানায়, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় গাজা সিটির জায়তুন এলাকায় আবু শাহবান পরিবারের বেসামরিক একটি গাড়িতে ইসরায়েলি বাহিনীর ট্যাংকের গোলা আঘাত হানে। গাড়িটিতে করে তারা তাদের নিজ বাড়ির অবস্থা দেখতে যাচ্ছিলেন।

সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, নিহতদের মধ্যে সাত শিশু ও তিন নারী রয়েছেন। তিনি বলেন, “তাদের সতর্ক করা যেত বা অন্যভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যেত। কিন্তু যা ঘটেছে, তা প্রমাণ করে দখলদার বাহিনী এখনো রক্তপিপাসু এবং নিরীহ বেসামরিকদের বিরুদ্ধে অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে।”

সংস্থাটি এক পৃথক বিবৃতিতে জানায়, জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক কার্যালয়ের (ওসিএইচএ) সহায়তায় তারা এখন পর্যন্ত নয়জনের মরদেহ উদ্ধার করতে পেরেছে। তবে দুটি শিশুর মরদেহ এখনো নিখোঁজ, কারণ প্রচণ্ড বিস্ফোরণে তাদের দেহাবশেষ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে।

হামাস এই ঘটনাকে “গণহত্যা” বলে নিন্দা জানিয়েছে। সংগঠনটি দাবি করেছে, কোনো কারণ ছাড়াই ওই পরিবারের ওপর হামলা করা হয়েছে। এতইসঙ্গে তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যেন ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতি মেনে চলতে চাপ দেওয়া হয়।

এদিকে চলমান বন্দি বিনিময় চুক্তির মধ্যেই শনিবার পর্যন্ত ইসরায়েল অন্তত ৩৮ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে গাজার মিডিয়া অফিস। খাদ্য ও চিকিৎসাসহ জরুরি সহায়তা প্রবাহও কঠোরভাবে সীমিত রাখা হয়েছে। জাতিসংঘ এ সপ্তাহে সতর্ক করেছে, গাজায় ত্রাণ কনভয়গুলো দুর্ভিক্ষকবলিত এলাকায় পৌঁছাতে হিমশিম খাচ্ছে। বর্তমানে গাজার প্রায় ৪৯ শতাংশ মানুষ দৈনিক ছয় লিটারেরও কম পানযোগ্য পানি পাচ্ছেন। আর এটি জরুরি মানের চেয়েও অনেক কম।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে তারা গড়ে দৈনিক ৫৬০ টন খাদ্য গাজায় পাঠাতে পেরেছে। আর এটি মারাত্মক অপুষ্টি ও দুর্ভিক্ষ রোধে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।

এবি/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ইসি স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে : হাসনাত আবদুল্লাহ Oct 19, 2025
img
যুদ্ধ বিরতির পর বিপদে পড়েছেন নেতানিয়াহু Oct 19, 2025
img
বাংলাদেশ-কুয়েত পররাষ্ট্রস‌চিব পর্যায়ে বৈঠক চলছে Oct 19, 2025
img
ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে ৩ দিনে ডিএমপির ৪৫৮১ মামলা Oct 19, 2025
img
আজ থেকে বাড়ল মেট্রোরেল চলাচলের সময় Oct 19, 2025
img
আ. লীগ ফিরলে হাসিনার পা ধরেও মাফ পাবেন না: রাশেদ খান Oct 19, 2025
img
আজ নতুন বন্ধু দিবস Oct 19, 2025
img
চট্টগ্রামে পলাতক আসামি গ্রেপ্তার Oct 19, 2025
img
বাড়ি ভাড়া ৫ শতাংশের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান, ফের শহীদ মিনারে অবস্থান শিক্ষকদের Oct 19, 2025
img
শাহজালালে অগ্নিকাণ্ড নিয়ে সেনাবাহিনীর ফেসবুক পোস্ট Oct 19, 2025
img
২১ ঘণ্টা পরও কার্গো ভিলেজ থেকে উড়ছে ধোঁয়া Oct 19, 2025
img
ইসি সচিবের সঙ্গে সভায় এনসিপির প্রতিনিধিদল Oct 19, 2025
img
বিগত ৬ বছরে এত বাজে কখনো খেলেনি ভারত Oct 19, 2025
img
রাফা ক্রসিং বন্ধের ঘোষণা নেতানিয়াহুর Oct 19, 2025
img
শাপলা প্রতীক দেওয়া সম্ভব নয় : ইসি আনোয়ারুল ইসলাম Oct 19, 2025
img
সাগরের লঘুচাপ নিম্নচাপে রূপ নেবে : আবহাওয়া অধিদপ্তর Oct 19, 2025
img
১১ মিলিয়ন ডলার জামিনে মুক্তি পেলো গাদ্দাফির ছোট ছেলে হানিবাল Oct 19, 2025
img
ডর্টমুন্ডকে হারিয়ে বায়ার্নের টানা ৭ম জয় Oct 19, 2025
img
চট্টগ্রামে পৌঁছেছে ওমানে নিহত ৮ প্রবাসীর লাশ Oct 19, 2025
img
এর চেয়ে বাজে উইকেট গায়ানাতে ছিল: রিশাদ Oct 19, 2025