৮৫০ কোটি ডলারের রেয়ার আর্থ বা বিরল খনিজ চুক্তি স্বাক্ষর করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ। স্থানীয় সময় সোমবার ওয়াশিংটনে এ চুক্তি স্বাক্ষর করেন দুই নেতা। এ চুক্তির ফলে দক্ষিণ চীন সাগরে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এমনকি এই চুক্তিকে চীনের বিরুদ্ধে কৌশলগতভাবে বড় বার্তা হিসেবেও দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিশ্বের প্রায় ৯০ শতাংশ রেয়ার আর্থ ও ম্যাগনেট প্রক্রিয়াজাত করে চীন, যা বৈশ্বিক প্রযুক্তি শিল্পে একচেটিয়া প্রভাব রাখে। এসব খনিজ ব্যবহৃত হয় ইলেকট্রনিক্স, বৈদ্যুতিক গাড়ি, স্যাটেলাইট, এমনকি ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতেও। সম্প্রতি বেইজিং ঘোষণা দিয়েছে, রেয়ার আর্থযুক্ত যে কোনো পণ্য রফতানির আগে বিদেশি কোম্পানিকে সরকারের অনুমতি নিতে হবে। এতে উদ্বেগে পড়েছে মার্কিন শিল্প ও প্রতিরক্ষা খাত।
জবাবে ট্রাম্প প্রশাসনও পাল্টা প্রস্তুতি নিচ্ছে। হুঁশিয়ারি দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, বেইজিং রফতানি সীমাবদ্ধতা না তুলে নিলে চীনা পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক বসানো হবে। মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, চীন যদি অবিশ্বস্ত অংশীদার হয়, তবে বিশ্বকে নতুন সরবরাহ শৃঙ্খল গড়তে হবে। ফোর্ড ও জেনারেল মোটরসের মতো কোম্পানিগুলো এরইমধ্যে সরবরাহ সংকট নিয়ে হোয়াইট হাউসে উদ্বেগ জানিয়েছে।
বিকল্প খনিজ উৎস গড়তে এবার অস্ট্রেলিয়াকে সামনে আনছে যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় সোমবার হোয়াইট হাউজে এক বৈঠকে আটশো ৫০ কোটি ডলারের রেয়ার আর্থ বা খনিজ চুক্তি স্বাক্ষর করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ।
অস্ট্রেলিয়ায় রেয়ার আর্থসের বড় মজুত থাকলেও উৎপাদন অবকাঠামো এখনও সীমিত। এই চুক্তিকে এইউকেইউএস নিরাপত্তা জোটের কৌশলগত অংশ হিসেবেও দেখা হচ্ছে। চুক্তিতে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র, আন্ডারওয়াটার ড্রোন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি উন্নয়নের সমঝোতাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
বৈঠকের সময়ই উত্তেজনা বাড়ে দক্ষিণ চীন সাগরে। অস্ট্রেলিয়ার অভিযোগ, তাদের টহল বিমানের পাশে বিপজ্জনকভাবে ফ্লেয়ার ছেড়েছে চীনা যুদ্ধবিমান। বেইজিং পাল্টা দাবি করেছে, অস্ট্রেলীয় বিমান চীনের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। এই ঘটনার পর ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইন্দো-প্যাসিফিক জোটকে আরও শক্তিশালী করবে। এমনকি আগামী বছর প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আমন্ত্রণে চীন সফরে যাবেন বলেও ঘোষণা দেন তিনি।
এসএস/এসএন