গত বছর জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারায় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। তার আগে জানুয়ারিতে বিতর্কিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিটে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। আন্দোলন চলাকালীন সাকিব আমেরিকায় অবস্থান করছিলেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের নির্দেশে যখন ছাত্র-জনতার ওপর চরম বলপ্রয়োগ এবং হত্যাযজ্ঞ চলছিল, জনআকাঙ্ক্ষার বিপরীতে নিশ্চুপ থাকেন এই ক্রিকেটার ও রাজনীতিবিদ। সরকার পতনের পর থেকে বলতে গেলে স্বেচ্ছানির্বাসনেই আছেন সাকিব।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের এক সময়ের 'পোস্টারবয়' সাকিব আল হাসান এখন দেশের ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত। জাতীয় দল থেকে অবসরের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দিলেও তার তার ফেরার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কিছুদিন আগে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রকাশ্যেই ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি সাকিবকে আর জাতীয় দলে খেলতে দেবেন না। উপদেষ্টা তাকে 'স্বৈরাচারের সহযোগী' বলে অবিহিত করেন।
জাতীয় দলে জায়গা হারালেও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে নিয়মিতই খেলছেন সাকিব। চলতি বছর সিপিএল ও কানাডা গ্লোবাল টি-টোয়েন্টির পাশাপাশি খেলেছেন মাইনর লিগ ক্রিকেটেও (এমআইএলসি)। আটলান্টা ফায়ারের হয়ে শিরোপা জেতা সাকিব সম্প্রতি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ক্রিকবাজকে। সেই সাক্ষাৎকারে খোলামেলা আলোচনা করেছেন বিভিন্ন বিষয়ে।
ফ্ল্যাশব্যাকে গত বছরের অভ্যুত্থানের সময়ে চলে গেলে নিজের ভূমিকাকে কীভাবে দেখেন সাকিব?–মুহূর্তটা বিরুদ্ধে গেলেও অনুশোচনায় ভুগছেন না তিনি।
সাকিবের ভাষায়, 'আমি মনে করি সেটি ছিল একটিমাত্র মুহূর্ত যা আমার বিরুদ্ধে গেছে। হয়তো মানুষ অন্য কিছু আশা করছিল, আর আমি সেই অবস্থানে ছিলাম না, কিংবা সত্যি বলতে আমি পুরো পরিস্থিতি বুঝতেই পারিনি। আমি তখন দেশের বাইরে ছিলাম, তাই বিষয়টা কঠিন ছিল। আমি তাদের অবস্থান বুঝতে পারি এবং সম্মান করি, কিন্তু আমার কোনো অনুশোচনা নেই। বরং আমি মনে করি, মানুষ এখন ধীরে ধীরে ব্যাপারটা বুঝতে শুরু করেছে।'
ক্রিকবাজে দেয়া সাক্ষাৎকারে সাকিব কথা বলেছেন অবসর প্রসঙ্গে। জানিয়েছেন, কোনো ফরম্যাটেই আনুষ্ঠানিক অবসর নেননি তিনি। সাকিব এ ব্যাপারে বলেন, 'না, সত্যি বলতে, আমি এখনো কোনো ফরম্যাট থেকেই অফিসিয়ালি অবসর নিইনি।' এ সময় তিনি হোম অব ক্রিকেটে ক্যারিয়ারের ইতি ঘোষণার ইচ্ছা প্রকাশ করেন, 'হ্যাঁ, ১০০%। এটা হয়তো আমার চেয়ে আমার ভক্তদের জন্যই বেশি। যদি সেটা সম্ভব হয়, তাহলে সেটাই হবে আমার ও আমার সমর্থকদের জন্য সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্ত।'
তবে, আশা পূরণের রাস্তাটা বোধহয় একটু বেশিই ক্ষীণ।
ইএ/টিকে