জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেছেন, আওয়ামী লীগকে আওয়ামী লীগ বানানোর জন্য সবথেকে বড় দায়ী জাতীয় পার্টি। সেই দলটার ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। জাতীয় পার্টি কিন্তু জাতীয় পার্টি না, জাতীয় পার্টি মানেই আওয়ামী লীগ।
তিনি বলেন, সামনে একটা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সে নির্বাচনে কোনোভাবে যেন পতিত ফ্যাসিবাদীদের কেউ অংশগ্রহণ করতে না পারে সেটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। আওয়ামী লীগ সামনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না সে ব্যাপারে সরকারের তরফ থেকে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
রোববার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে গণঅধিকার পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আখতার হোসেন বলেন, জাতীয় পার্টি নির্বাচনে আসার সুযোগ পাওয়ার অর্থ হলো- আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলো। আমার গণঅধিকার পরিষদের ভাইয়েরা জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে মার খেয়েছেন। নুরুল হক নুর ভাইকে রক্ত ঝরাতে হয়েছে। আমরা খুব স্পষ্ট করে বলি, আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। এই আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে নিয়ে আসার জন্য জাতীয় পার্টির যেসব নেতা বক্তব্য দিচ্ছেন তারা দেশবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছেন। তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
জুলাই সনদের বিষয়ে এনসিপির এই নেতা বলেন, একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা তৈরি হবে, জবাবদিহি থাকবে, আইনের শাসন থাকবে, বাংলাদেশে ক্ষমতার ভারসম্য থাকবে। এই বিষয়গুলো ধারণ করেই আমরা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে রাজনৈতিক দলগুলো একত্রিত হয়েছি। আমরা অনেকগুলো মৌলিক পরিবর্তনের বিষয়ে একমত হয়েছি। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়ার ব্যাপারে আমরা একমত হয়েছি। তারপরও এখনো পর্যন্ত সেই জায়গাটাকে আমরা সুনিশ্চিত করতে পারিনি।
জুলাই সনদের পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন ছাড়া এই সংকট থেকে উত্তরণের আর কোনো উপায় নেই উল্লেখ করে আখতার বলেন, বাংলাদেশের সব দলই আইনি ভিত্তি চায়। কোন জায়গায় বাধা তা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। যদি কারও দলীয় স্বার্থের কারণে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়ার জায়গায় কোনো বাধা তৈরি হয়, সেই দলের সঙ্গে কথা বলে তাদের দলীয় স্বার্থের জায়গা থেকে তাদের বিরত থাকার আহ্বান জানাতে হবে। আমরা বাংলাদেশের প্রশ্নে এক হতে চাই। এক হতে চাই এই বাংলাদেশটাকে নতুন করে গড়ার ক্ষেত্রে।
এ সময় নিজের রাজনৈতিক জীবনের শুরুর দিকে গণঅধিকার পরিষদ ও ছাত্র অধিকার পরিষদের স্মৃতিচারণ করেন আখতার। তিনি বলেন, গণঅধিকার পরিষদে তারুণ্যের সবথেকে সুন্দর সময়টা আমি অতিবাহিত করেছি। এই গণঅধিকার পরিষদ, ছাত্র অধিকার পরিষদ তৈরিতে আমরা জেল খেটেছি, রিমান্ডে গিয়েছি। রাজপথের সংগ্রামে আমরা নিজেদের সম্পৃক্ত রেখেছি। পরবর্তী সময়ে যদিও সংগঠন পরিবর্তন করে আমি গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তিতে যুক্ত হয়েছি, কিন্তু সেই গোড়ার সময়ে থেকে ছাত্র অধিকার পরিষদের প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। সেই লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্যকে এখনো পর্যন্ত আমরা ধারণ করে চলেছি।
এমআর/টিকে