রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও উপস্থাপক জিল্লুর রহমান বলেছেন, মেট্রোরেল স্বপ্নটা এখন মাঝে মাঝেই থমকে যাচ্ছে নানা ঘটনায় নানা কারণে। ঢাকার মেট্রো রেল প্রকল্পটা ছিল একসময় নগর জীবনের প্রতিশ্রুতির একটা প্রতীক। এটা এমন একটা স্বপ্ন যেখানে প্রতিদিন কয়েক মিলিয়ন মানুষ ভরসা করতো সময় বাঁচাবার, জানজটমুক্ত এক শহরের আশায়। কিন্তু আজ সেই প্রকল্প এক অদ্ভুত দীর্ঘতর অনিশ্চিত এবং বিতর্কিত পথে হাঁটছে।
সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলের এক ভিডিওতে তিনি এসব কথা বলেন।
জিল্লুর রহমান বলেন, এই সংকটের কেন্দ্রে রয়েছেন ঢাকা মাস ট্রান্জিট কোম্পানি লিমিটেড-ডিএমটিসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ। যাকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা অভিযোগ, অব্যবস্থাপনা আর আস্থার গভীর সংকট। ফারুক আহমেদের নিয়োগ নিয়েই শুরু বিতর্কটা।
অভিযোগ রয়েছে তিনি অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব পেয়েও সেটি গোপন রেখে এমডি পদে নিযুক্ত হয়েছেন। যা বাংলাদেশের পাবলিক সার্ভিস আইন ২০১৮-এর স্পষ্ট লঙ্ঘন।
জিল্লুর বলেন, আইন অনুযায়ী কোনো সরকারি কর্মকর্তা যদি বিদেশি নাগরিকত্ব অর্জন করেন তবে তার সরকারি পথ ধরে রাখার বৈধতা থাকে না। তবু তার নিয়োগ প্রক্রিয়া ছিল সম্পূর্ণরূপে 'অসুস্থ'।
কোনো উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তি বা প্রতিযোগিতামূলক বাছাই না করে অভ্যন্তরীণ প্রভাব খাটিয়ে এই নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। ফারুক আহমেদের নামে ভারতের আধার কার্ডও পাওয়া গেছে যা কেবল ভারতীয় নাগরিকদের জন্য প্রযোজ্য। এমন একজন ব্যক্তির হাতে দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্পের দায়িত্ব দেওয়া কতটা সংগত সেটাই এখন প্রশ্ন।
জিল্লুর আরো বলেন, ডিএমটিসিএল পুরোপুরি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থা যেখানে নিয়োগবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ করার কথা। এই ক্ষেত্রে সেই নিয়ম মানা হয়নি।
ফারুক আহমেদ নিজেই দাবি করেছেন যে, ঊর্ধ্বতন ৬৬ জন কর্মকর্তা তার নিয়োগকে সমর্থন দিয়েছেন, যা শোনায় এক প্রকার প্রশাসনিক নাটকীয়তার মতো। যেখানে যোগ্যতার চেয়ে সমর্থনপত্র বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তার নিয়োগের পর থেকেই প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি কমতে শুরু করে। এমআরটি লাইন ওয়ান ও এমআরটি লাইন ফাইভ এ দুটো প্রকল্পই এখন কার্যত স্থবির।
ইএ/এসএন