ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, আমি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভয় পাই না, যদিও অন্যান্য পশ্চিমা নেতারা তাকে ভয় পেতে পারেন।
তিনি দাবি করেছেন, ওয়াশিংটনে তাদের শেষ সাক্ষাৎকে ঘিরে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল তা ভিত্তিহীন এবং তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ‘ভালো সম্পর্ক’ বজায় রেখেছেন।
দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি জানান, ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন এবং ইউক্রেনের প্রতি রাজা খুব সহানুভূতিশীল ও সমর্থনশীল।
এই সাক্ষাৎকার নেওয়া হয় এমন এক সময়, যখন রাশিয়ার ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনের বিদ্যুৎ গ্রিড মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ফলে দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দেয়।
সাক্ষাৎকার চলাকালীন দুইবার লাইট নিভে যায়।
জেলেনস্কি অস্বীকার করেন যে, গত অক্টোবরে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তেজনাপূর্ণ বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট যুদ্ধক্ষেত্রের মানচিত্র ছুড়ে ফেলেছিলেন। তিনি বলেন, ‘তিনি কিছু ছুড়ে ফেলেননি, আমি নিশ্চিত।’ জেলেনস্কির ভাষায়, তাদের সম্পর্ক ছিল স্বাভাবিক, পেশাদার এবং গঠনমূলক।
ফিনান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছিল, ট্রাম্প নাকি জেলেনস্কিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কঠোর শর্তে যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে চাপ দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, ইউক্রেন রাজি না হলে পুতিন দেশটিকে ধ্বংস করে ফেলবেন। তবে জেলেনস্কি বলেছেন, বৈঠকের ঘটনা একেবারেই ভিন্নভাবে ঘটেছিল।
জেলেনস্কির বর্ণনায়, ইউক্রেনীয় প্রতিনিধি দল ট্রাম্প ও তার টিমের সামনে তিনটি আলাদা প্রেজেন্টেশন দেয়, যেখানে তারা ব্যাখ্যা করেন— কীভাবে অস্ত্র সরবরাহ ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে রাশিয়ার সক্ষমতা দুর্বল করা যায়। তাদের লক্ষ্য ছিল রাশিয়ার বোমা হামলার ক্ষমতা কমিয়ে এনে পুতিনকে আলোচনার টেবিলে বসানো।
কিয়েভের প্রেসিডেন্ট ভবনে বসে জেলেনস্কি বলেন, ‘বিশ্বের সবাই ট্রাম্পকে ভয় পায়। এটাই সত্য।’ তবে যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি কি ট্রাম্পকে ভয় পান, তিনি স্পষ্ট বলেন, ‘না… আমরা আমেরিকার শত্রু নই। আমরা বন্ধু। তাহলে ভয় পাওয়ার কী আছে?’
তিনি আরো বলেন, ‘ট্রাম্পকে নির্বাচিত করেছেন মার্কিন জনগণ।
আমাদের উচিত আমেরিকানদের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানানো, যেমন আমাকেও আমার জনগণ নির্বাচিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের কৌশলগত মিত্র, বহু বছর ধরে, হয়তো শতাব্দী ধরে। আমাদের দুই দেশের মধ্যে রয়েছে গভীর ও অভিন্ন মূল্যবোধ, যা ‘সাম্রাজ্যবাদী’ ও ইতিহাস বদলাতে চাওয়া রাশিয়ার থেকে একেবারেই আলাদা।’
আরপি/টিকে