ভারতী সিং যাঁকে এখন গোটা ভারত চেনে মঞ্চ ও টেলিভিশনের সবচেয়ে জনপ্রিয় কৌতুকশিল্পী হিসেবে। কিন্তু হাসির আড়ালের তাঁর জীবনের গল্প একেবারেই অন্যরকম। সেই গল্পে আছে অভাব, ক্ষুধা, অপমান আর অদম্য লড়াইয়ের অধ্যায়। সম্প্রতি নিজের শৈশবের একটি স্মৃতি প্রকাশ করে ভারতী যেন সবাইকে মনে করিয়ে দিলেন, সাফল্যের পেছনে কতটা কষ্ট লুকিয়ে থাকে।
ভারতী বলেছেন, ছোটবেলায় তিনি দেখতেন, অনেকে অর্ধেক আপেল খেয়ে ডাস্টবিনে ফেলে দিচ্ছে। তখন তাঁর মনে হতো, যদি পারেন, সেই ফেলে দেওয়া অর্ধেক আপেলটা তুলে খেয়ে ফেলেন। কারণ তখন তাঁদের সংসারে ছিল না পেট ভরে খাবার জোগানোর সামর্থ্য। ভারতী আরো বলেন, “মা অন্যের ঘরে কাজ করত আর আমি বসে থাকতাম। মা টয়লেট সাফ করত। তারপর কাজের বাড়ি থেকে বেঁচে যাওয়া সবজি-রুটি মা’কে দিত। ওদের ওই বাসি রুটি আমাদের কাছে টাটকা ছিল। আমরা ভীষণ খুশি হয়ে যেতাম।” তাঁর এই স্বীকারোক্তি যেন কেবল এক ব্যক্তিগত গল্প নয়, বরং এক মায়ের ত্যাগ আর এক মেয়ের লড়াইয়ের অমর প্রতিচ্ছবি।এই স্বীকারোক্তি প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনায় আসে তাঁর বক্তব্য।
অভাবের সেই দিনগুলোতে ভারতী প্রতিদিন ভাবতেন, একদিন যেন সংসারের দুঃখ মোচন করতে পারেন। হাসির মঞ্চে পা রাখার পর থেকেই শুরু হয় তাঁর জীবনের মোড় ঘোরা অধ্যায়। দর্শকের ভালোবাসা, কঠোর পরিশ্রম আর প্রতিভার জোরে ধীরে ধীরে তিনি জায়গা করে নেন ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় কৌতুক শিল্পীদের তালিকায়।
আজ যাঁর এক হাসিতেই পুরো স্টুডিও মুখরিত হয়ে ওঠে, সেই ভারতী সিং একসময় ভাবতেন, পরের দিন ঠিকঠাক খাবার জুটবে কি না। তাঁর এই গল্প শুধু বিনোদনের নয়, এটি সংগ্রামী জীবনের এক বাস্তব দলিলও বটে।
ভারতীর এই অকপট স্বীকারোক্তি যেন নতুন করে ছুঁয়ে গেছে ভক্তদের হৃদয়। অনেকেই বলছেন, তাঁর জীবনের এই অধ্যায় তরুণ প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। কারণ, যে মেয়ে একসময় ফেলে দেওয়া আপেলের দিকে তাকিয়ে থাকতেন, আজ সেই মেয়েই কোটি টাকার শো উপস্থাপনা করেন, হাসিতে ভরিয়ে রাখেন কোটি মানুষের মন।
আরপি/টিকে