ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার কারণে চীন জাপানে যাওয়ার প্রায় ৫ লাখ ফ্লাইট বাতিল করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভিসা প্রক্রিয়া স্থগিত এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার মধ্যেই এই ফ্লাইট বাতিলের ঘটনা ঘটেছে। কারণ তাইওয়ান বিষয়ে জাপানের অবস্থান নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করেছে।
দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়, চীন যদি তাইওয়ানে আক্রমণের চেষ্টা করে, তবে জাপান সামরিকভাবে জড়িত হতে পারে- জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির এমন মন্তব্যের পরই উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়।
তার এই মন্তব্যে চীনা সরকার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় এবং চীনা ভ্রমণকারী ও শিক্ষার্থীদের জাপানে না যাওয়ার সতর্কতা জারি করে।
কমপক্ষে সাতটি চীনা এয়ারলাইন্স ঘোষণা করেছে যে তারা জাপানে বুক করা ফ্লাইটের ক্ষেত্রে ভ্রমণকারীদের বিনা খরচে বাতিলের সুযোগ দেবে। এর মধ্যে তিনটি রাষ্ট্রীয় সংস্থাও রয়েছে।
একজন বিমান ভ্রমণ বিশ্লেষক হানমিং লি বলেছেন, যাত্রা সংক্রান্ত তথ্য ইঙ্গিত করে যে ১৫ থেকে ১৭ নভেম্বরের মধ্যে জাপানগামী প্রায় ৫০০,০০০ ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।
চীনা গণমাধ্যম জিমু নিউজ জানিয়েছে, সিচুয়ান এয়ারলাইনস জানুয়ারি থেকে মার্চের শেষ পর্যন্ত চেংদু এবং সাপ্পোরোর মধ্যে সব ফ্লাইট বাতিল করেছে, বাজেট ক্যারিয়ার স্প্রিং এয়ারলাইনস একাধিক জাপান ফ্লাইট বাতিল করেছে।
চীন জাপানের দ্বিতীয় বৃহত্তম পর্যটক উৎস এবং গত বছরের হিসাবে প্রায় ১,২০,০০০ চীনা শিক্ষার্থী জাপানে পড়াশোনা করে; যা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মূল অংশ। এই সিদ্ধান্তের ফলে সোমবার জাপানের খুচরা ও ভ্রমণ খাতের কম্পানিগুলোর শেয়ারমূল্য হ্রাস পায়।
লি গার্ডিয়ানকে বলেন, কভিড মহামারির শুরুর দিকের পর তিনি এ ধরনের সবচেয়ে বড় ফ্লাইট বাতিলের ঘটনা দেখছেন, তবে এর ফলে চীনের অভ্যন্তরীণ বিমানশিল্পে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না।
তিনি বলেন, এটি এয়ারলাইনসগুলোর জন্য বড় ক্ষতি নয়, কারণ চীন-জাপান বাজারটি পুরো দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় খুবই ছোট।
এই ভ্রমণ বাতিলগুলো একগুচ্ছ অর্থনৈতিক পাল্টা ব্যবস্থার অংশ, যা এর আগে রবিবার পর্যন্ত কেবলমাত্র কথার লড়াইয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।
টিকে/