সৌদি আরবের কাছে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রি করা হবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে হোয়াইট হাউসে বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এই তথ্য জানিয়েছেন তিনি।
নির্মাতা প্রতিষ্ঠান লকহিড মার্টিনের তথ্য অনুযায়ী, একটি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের গড় মূল্য প্রায় সাড়ে ৮২ মিলিয়ন ডলার। ট্রাম্প বলেছেন, আমরা এফ-৩৫ বিমান বিক্রি করতে যাচ্ছি। তারা আমাদের দারুণ মিত্র।
দুই নেতা স্থানীয় সময় মঙ্গলবার হোয়াইট হাউজে বৈঠকে মিলিত হবেন। সাত বছর আগে সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের পর সালমান এই প্রথম হোয়াইট হাউসে আসছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা পর্যালোচনায় বলা হয়েছিল, জামাল খাসোগির বিরুদ্ধে অপারেশনের অনুমোদন দিয়েছিলেন যুবরাজ সালমান। তবে তিনি ওই হত্যাকাণ্ডে কোনো ধরনের ভূমিকা থাকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
মোহাম্মদ বিন সালমান সবশেষ ২০১৮ সালে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের সময় যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছিলেন। ওই বছরেই খাসোগি ইস্তাম্বুলে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। ট্রাম্প ও যুবরাজ গত মে মাসে রিয়াদে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবের কাছে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রিতে সম্মত হয়। এটিকে হোয়াইট হাউস ছয়শ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ চুক্তির অংশ হিসেবে ‘অস্ত্র বিক্রিতে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সমঝোতা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলে।
সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রের বড় ক্রেতা।
তবে তাদের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রির খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইসরায়েলের কর্মকর্তারা। দেশটির সামরিক কৌশলকে এটি ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলে তারা যুক্তরাষ্ট্র ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বলছেন।
ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং ওই অঞ্চলে একমাত্র ইসরায়েলের হাতেই এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান আছে।
মঙ্গলবারের বৈঠকে ট্রাম্প ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের জন্য তার আব্রাহাম অ্যাকর্ডে স্বাক্ষরের জন্য সৌদি আরবকে চাপ দিতে পারেন। সৌদি আরব এজন্য ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পথ খুঁজে বের করাকে শর্ত হিসেবে উল্লেখ করে আসছে।
লকহিড মার্টিন কোম্পানির তৈরি এই বিমানে আছে স্টেলথ প্রযুক্তি। অর্থাৎ এ বিমান ওড়ার সময় শত্রুপক্ষের রাডারে তার অস্তিত্ব ধরা পড়বে না। তা ছাড়া শত্রুপক্ষের বিমানের চোখে পড়ার আগেই সে নিজেই তাকে দেখতে পাবে।
বিমানটির পাইলটের হেলমেটে বসানো আছে একটি ডিসপ্লে সিস্টেম; যাতে অন্যদিকে মুখ করে থাকা অবস্থায়ও শত্রু বিমানের দিকে গুলি করতে পারবে। পাইলট শত্রু লক্ষ্যবস্তুর গতিবিধি চিহ্নিত করতে পারবেন, শত্রু রাডার জ্যাম বা অকার্যকর করে দিতে পারবেন এবং আক্রমণ প্রতিহত করতে পারবেন। এছাড়া এ বিমানের যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত অপারেশন কমান্ডারের সাথে শেয়ার করা যাবে। বিবিসি বাংলা।
আরপি/এসএন