আধুনিক বাংলা গানকে সমৃদ্ধ করা শিল্পীদের তালিকায় সুবীর নন্দী একটি উজ্জ্বল নাম। ১৯ নভেম্বর এই কিংবদন্তি সংগীতশিল্পীর জন্মদিন। একুশে পদকপ্রাপ্ত সুবীর নন্দী চার দশকেরও বেশি দীর্ঘ ক্যারিয়ারে গেয়েছেন আড়াই হাজারের বেশি গান, যা আজও শ্রোতাদের মনে অমলিন। বেতার, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র- সব মাধ্যমেই তিনি উপহার দিয়েছেন অসংখ্য কালজয়ী সৃষ্টি। ব্যক্তি সুবীর নন্দী আর নেই, কিন্তু তাঁর কণ্ঠ ও সুরেলা অনুভব যুগের পর যুগ বেঁচে থাকবে বাংলা সংগীতের প্রাণে।
জন্মদিনে স্মরণ করা যাক তাঁর কিছু স্মরণীয় গানের কথা।
দিন যায় কথা থাকে: ১৯৭৬ সালে ‘সূর্যগ্রহণ’ চলচ্চিত্রে প্রথমবার প্লেব্যাকের সুযোগ পান সুবীর নন্দী। তবে প্রকৃত পরিচিতি আসে ১৯৭৯ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দিন যায় কথা থাকে’ চলচ্চিত্রের শিরোনাম গানটির মাধ্যমে। এই গানই তাকে পৌঁছে দেয় জনপ্রিয়তার শীর্ষে এবং বাংলা সংগীতের অঙ্গনে তাঁর জন্য তৈরি করে এক নতুন পথ।
বন্ধু হতে চেয়ে তোমার, পাহাড়ের কান্না দেখে, একটি কথাই শুধু লিখেছি আমি, পাখিরে তুই দূরে থাকলে তার জনপ্রিয় গান।
সুবীর নন্দী এই তুমুল জনপ্রিয় গান গেয়েছেন ‘লাল গোলাপ’ সিনেমায়। তার ‘পাখিরে তুই দূরে থাকলে’ গানটি এখনো মুখে মুখে শোনা যায়।
কত যে তোমাকে বেসেছি ভাল: ১৯৮৬ সালে ‘উছিলা’ সিনেমায় গাওয়া ‘কত যে তোমাকে বেসেছি ভাল’ সুবীর নন্দীর জনপ্রিয়তাকে পৌঁছে দেয় আকাশছোঁয়া জায়গায়।
আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়: ১৯৮৪ সালে আলমগীর কবিরের ‘মহানায়ক’ সিনেমায় ‘আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়, তবু কেন ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায়’ গানটিও বেশ সাড়া ফেলে তখনকার দর্শক-শ্রোতাদের মাঝে। শুধু তাই নয়, এই গানটিই সুবীর নন্দীকে এনে দেয় প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই ‘পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই’ও জনপ্রিয়তা পায় সমান তালে। লোকমুখে ঘুরতে থাকে এই গানগুলো।
একটা ছিল সোনার কন্যা: নন্দিত কথাসাহিত্যিক প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ সিনেমায় ‘একটা ছিল সোনার কন্যা’ কথার গানটি সুবীর নন্দীকে শুধু তৃতীয় জাতীয় পুরস্কারই এনে দেয়নি; বরং তাকে বাংলা সংগীতাঙ্গনে অমরত্বের স্থানে পৌঁছে দিয়েছে।
ও আমার উড়াল পঙ্ক্ষী রে: ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ সিনেমারই আরেক গান ‘ও আমার উড়াল পঙ্ক্ষী রে’ সমানতালে জনপ্রিয়তা পায়, ছড়িয়ে পড়ে লোকমুখে। নিজ কণ্ঠে গাওয়া এই গানের মতোই যেন উড়াল দিয়ে চলে গেলেন চারবার পুরস্কার পাওয়া কণ্ঠশিল্পী সুবীর নন্দী
কেএন/টিএ