নির্বাচনি আচরণবিধির নানান অসঙ্গতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর তোপের মুখে পড়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে সাংঘর্ষিক বিধান, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বিঘ্ন হওয়ার আশংকা, আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিতে সক্ষমতা, সদিচ্ছার অভাবসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে দলগুলো।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) আয়োজিত সংলাপে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ আমন্ত্রিত দলগুলোর নেতারা এসব বিষয় তুলে ধরেন।
জামায়াত নেতা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনির বলেন, আচরণবিধির ৭-এর ‘ক’ উপধারায় ‘কোন প্রকার পোস্টার ব্যবহার করা যাইবে না’ উল্লেখ থাকার পরও ৭-এর ‘ঘ’ উপধারায় পোস্টারসহ অন্যান্য প্রচারসামগ্রী ব্যবহারের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করায় বিষয়টি রয়েছে। আগে বলছেন পোস্টার ব্যবহার করা যাবে না, আবার পোস্টার সরাতে পারবে না- এই কথা বলছেন কেন?
তিনি আরও বলেন, বিধি ভাঙলে শাস্তির কথা বলা আছে। কিন্তু কে দেবে শাস্তি তা উল্লেখ নেই। আচরণবিধিতে বলতে হতো কোর্টটা কে নির্ধারণ করবে? আপনার এই বিধান পড়ে মনে হয় না যে, আপনি যে শাস্তিটা আরোপ করতে চাচ্ছেন, কে শাস্তি আরোপ করবে- এই মর্মে আচরণবিধিতে থাকা উচিত ছিল। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম মুসা বলেন, যারা আচরণবিধি করছেন স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে যে ভোটের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা নেই। আচরণবিধি একটি নিপিড়নমূলক আইনে দাঁড়াবে। বিধিমালা কোথাও লঙ্ঘন হলে তদন্ত কমিটি হবে, অভিযোগ সেখানে দিতে হবে। এখন তদন্ত কারা করবে সেটা বলা নেই। আবার কমিশনের কাছে সরাসরি অভিযোগ দেওয়া যাবে, কমিশন আবার তদন্ত করবে। তাহলে এটা আবার নিচে যাবে। কমিশন প্রার্থিতা বাতিলের প্রক্রিয়া রেখেছে। কিন্তু সেটা কীভাবে, কত দিনের মধ্যে করবে তা উল্লেখ নেই। আমরা যদি অভিযোগ জানাই, সে যদি ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে কী হবে সেই অফিসারের তা কিন্তু আইনে নেই।
তিনি বলেন, বিলবোর্ডের ক্ষেত্রে কাপড় দিয়ে তৈরি করা, এটা প্রাকটিক্যাল না। দলের ব্যয় ৫০ লাখ টাকা করা হয়েছে। অথচ একটা বিলবোর্ড করতেই ২০ লাখ টাকা লাগে। এতে ছোট দলগুলোকে অন্যায্য প্রতিযোগিতার মধ্যে ফেলে দিচ্ছেন। এগুলো কীভাবে ব্যবস্থা করবেন? একটা সুন্দর বিধি আপনারা করেছেন, কিন্তু আইনের ভেতরে অনেক অস্পষ্টতা এবং কাঠামোগত দুর্বলতা রয়েছে। যে আইন করেছেন সেটা বাস্তবায়ন করার সক্ষমতা এবং সদিচ্ছা নাই আপনাদের।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, এরই মধ্যে হাজার হাজার ফেস্টুন, বিলবোর্ড হয়ে গেছে- এগুলো আপনি অপসারণ করলেন। তারপরে আপনি একজন প্রার্থী যার ওই পরিমাণ অর্থ ব্যয় করার সামর্থ্য নাই, সক্ষমতা নাই, তাকে আপনি আগে থেকেই অসম প্রতিযোগিতার মধ্যে ফেলে দিলেন।
ইউটি/টিএ