ভুটানের সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবহারের বিষয়টি কোনো দেশের আপত্তির কারণে আটকে নেই বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম। বিষয়টি পুরোপুরি বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যকার আলোচনাধীন বলেও জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রসচিব।
ভুটানের সঙ্গে আঞ্চলিক এয়ার কানেক্টিভিটি এবং সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবহারের বিষয়টি এবারের বৈঠকে আসবে কিনা, জানতে চাওয়া হয়। জবাবে তিনি বলেন, সৈয়দপুর বিমানবন্দর নিয়ে আলোচনা অনেক দিন ধরেই চলছে।
এটি কোনো দেশের আপত্তির কারণে আটকে আছে কিনা জানতে চাইলে আসাদ আলম সিয়াম বলেন, এটি কোনো দেশের আপত্তি বা রিজারভেশনের কারণে আটকে নেই। বিষয়টি পুরোপুরি বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যকার আলোচনা।
তিনি বলেন, কুড়িগ্রাম অঞ্চলে ভুটানের ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টরের জন্য একটি অর্থনৈতিক জোন ব্যবহারের প্রস্তাব বাংলাদেশ অনেক আগেই দিয়েছে। সৈয়দপুর বিমানবন্দরের নিকটবর্তী এই অঞ্চল ভুটান চাইলে শিল্পায়নে ব্যবহার করতে পারে এবং এতে বাংলাদেশের কোনো আপত্তি নেই।
ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলছে। যেখানে ভারতের আপত্তির কথাও আগে শোনা গেছে। এবারের শীর্ষ বৈঠকে বিষয়টি আসবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রসচিব জানান, ২০২৩ সাল থেকেই বাংলাদেশ ভুটানের জলবিদ্যুৎ আনার প্রস্তাব দিয়েছে এবং ভুটানও এতে আগ্রহী। তবে যেহেতু এটি ত্রিদেশীয় বিষয়, তাই এখনো আলোচনা চলমান।
ভুটান-ভারত আলোচনার অগ্রগতির পর বাংলাদেশ–ভুটান পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, ভুটানের সঙ্গে বৈঠকে জলবিদ্যুৎ ইস্যুটি অবশ্যই আলোচনা হবে।
ভুটানে ভ্রমণের ক্ষেত্রে কর কমানো নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আসাদ আলম সিয়াম বলেন, ভুটানে ট্রাভেল ট্যাক্স কমানো বা শূন্য করার অনুরোধ জানানো হবে। আমরা অবশ্যই ট্রাভেল ট্যাক্স আরও কমানোর বিষয়ে অনুরোধ করব।
পররাষ্ট্রসচিব আরও বলেন, প্রকৌশল, চিকিৎসা, শিক্ষা ও খেলাধুলার ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধিরও প্রস্তাব দেওয়া হবে। বাংলাদেশের ফুটবল ফেডারেশন ভুটানের ফুটবল দলের জন্য একটি মাঠ হোম গ্রাউন্ড হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ চিহ্নিত করেছে, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভুটান দু’দেশই সার্কের সদস্য হওয়ায় সংস্থাটিকে আরও গতিশীল করার প্রস্তাব রাখা হবে। রেগুলার মুভমেন্ট ইস্যুতে ভুটানের কিছু আপত্তি রয়েছে। বাংলাদেশ তা ভুটানের সঙ্গে আবারও উত্থাপন করবে এবং তাদের অসুবিধাগুলো বুঝে সমাধানের চেষ্টা করবে।
সরকারি সফরে আগামী শনিবার (২২ নভেম্বর) সকালে ঢাকায় আসছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোবগে। ওইদিন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একান্ত বৈঠক করবেন সফররত ভুটানের প্রধানমন্ত্রী, পরে দুই দেশের মধ্যে প্রতিনিধি পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে। বৈঠকের পর আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ, ভুটানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ এবং কৃষি সহযোগিতা বিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে।
২৪ নভেম্বর ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর।
আরপি/এসএন