সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া রাতের আঁধারে বাসা থেকে সাংবাদিক ও ব্যবসায়ী নেতাকে তুলে নেওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সংস্থাটি এই ঘটনাকে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) একটি নীতি নিয়ে ভিন্নমত দমনের অপচেষ্টার অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছে। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি তাদের এই উদ্বেগের কথা জানায়।
টিআইবি তার বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, এ ধরনের অস্বচ্ছ ও জবাবদিহিহীন অভিযান পতিত কর্তৃত্ববাদী আমলের নজরদারি ও ভীতির সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার হতাশাজনক পুনরাবৃত্তি। সংস্থাটি মনে করে, এই আচরণ অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষিত রাষ্ট্র সংস্কার প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং নাগরিকদের নিরাপত্তা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও আইনি সুরক্ষাকে গুরুতরভাবে হুমকির মুখে ফেলেছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ভিন্নমত দমনে গভীর রাতে কারণ না জানিয়ে বাসা থেকে তুলে নেওয়া, অভিযোগ গোপন রাখা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর বক্তব্যে অসঙ্গতি-কর্তৃত্ববাদী নিপীড়নমূলক চর্চা অব্যাহত রাখার উদ্বেগজনক দৃষ্টান্ত।
তিনি আরও বলেন, অভিযোগ থাকলে আইন অনুযায়ী সমন পাঠানো বা স্বাভাবিক সময়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার বাধ্যবাধকতাকে উপেক্ষা করে গভীর রাতে বাসা থেকে তুলে নেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, এনইআইআর নিয়ে সমালোচনার জেরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ওই সাংবাদিক ও মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাকে তুলে নেয়। ডিবির পক্ষ থেকে এই ঘটনায় পরস্পরবিরোধী ব্যাখ্যা (তথ্য যাচাই, বা সংবাদ সম্মেলনের আমন্ত্রণপত্রে অসঙ্গতি) দেওয়া হয়েছে। ড. ইফতেখারুজ্জামান এ ধরনের পরস্পরবিরোধী ব্যাখ্যা ও প্রকান্তরে মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলকে মনে করিয়ে দেন, সমালোচক মাত্রই শত্রু-এ মনোভাব আত্মঘাতী।
তিনি আরও বলেন, আমরা এ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসহ বাংলাদেশের সকল গোয়েন্দা ও নজরদারি সংস্থার আমূল সংস্কারের আহ্বান জানাচ্ছি। সরকারি নীতির সমালোচনা করা নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার এবং এগুলো অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
কেএন/টিকে