ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ‘বাবরি মসজিদ’ তৈরির ঘোষণা দিয়েছেন রাজ্যটির ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের এক বিধায়ক। তিনি বলেছেন, মুর্শিদাবাদে আগামী ৬ ডিসেম্বর ‘বাবরি মসজিদের’ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন তিনি।
তৃণমূল কংগ্রেসের এই বিধায়কের নাম হুমায়ুন কবির। তার এই মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি তার বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর অভিযোগও তুলেছে বিজেপি।
তবে পাল্টা প্রশ্ন তুলে কংগ্রেস বলেছে, মসজিদ বানানোতে দোষের কী আছে? রোববার (২৩ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সংবাদমধ্যিমটি বলছে, আগামী ৬ ডিসেম্বর মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় ‘বাবরি মসজিদের’ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক হুমায়ুন কবির। মূলত ওই দিনটিই অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ৩৩তম বার্ষিকী। আর এ ঘোষণার পরই রাজ্যটিতে ‘ব্যাপক রাজনৈতিক বিতর্ক’ তৈরি হয়েছে।
বিজেপির মুখপাত্র ইয়াসের জিলানি এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে অভিযোগ করেছেন, ভোটের স্বার্থে সচেতনভাবে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানো হচ্ছে।
তার দাবি, “তৃণমূল নেতারা, বিশেষ করে বিধায়ক হুমায়ুন কবির ঘৃণার রাজনীতির জন্যই পরিচিত। তিনি কেবল তোষণের রাজনীতি করেন। ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি করছেন। তিনি জানেন, আগামী নির্বাচনে মানুষ তৃণমূলকে ছুড়ে ফেলবে, সেখানে রাজনৈতিক পরিবর্তনের ঢেউ উঠছে। এই অস্থিরতার কারণেই হুমায়ুন কবির এবং তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা ভোটব্যাংক বাঁচাতে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন।”
এর আগে বিধায়ক হুমায়ুন কবির বলেছিলেন, “আমরা ৬ ডিসেম্বর মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করব। এটি নির্মাণ সম্পূর্ণ হতে তিন বছর লাগবে। বিভিন্ন মুসলিম নেতা এ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।”
তার এই মন্তব্য রাজনৈতিক ও ধর্মীয় মহলে সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। কংগ্রেস নেতা সন্দীপ দিক্ষিত বলেন, “কেউ মসজিদ বানালে তার সঙ্গে বাবরের কী সম্পর্ক? তারা যদি মসজিদ তৈরি করতে চায়, করতেই পারে।”
কংগ্রেস সংসদ সদস্য সুরেন্দ্র রাজপুত বলেন, “কেউ যদি মসজিদ, মন্দির, গুরুদ্বার বা চার্চ বানায়, এতে বিতর্কের কী আছে? কেন বিষয়টিকে অযথা বিতর্কিত করা হচ্ছে? প্রত্যেকেই তাদের উপাসনালয় নির্মাণের অধিকার রাখে।”
এ বিষয়ে ধর্মীয় ব্যাখ্যা দিয়েছে অল ইন্ডিয়া ইমাম অ্যাসোসিয়েশনও। সংগঠনের প্রধান মাওলানা সাজিদ রাশিদি বলেন, “সম্ভবত তারা বুঝতে পারছেন না যে একবার যেখানে মসজিদ তৈরি হয়, সেটি কিয়ামত পর্যন্ত মসজিদ হিসেবেই থাকে। ভারতে বাবরি মসজিদের নামে শত শত মসজিদ তৈরি হলেও অযোধ্যার আসল বাবরি মসজিদের গুরুত্ব কখনোই মুছে যাবে না।”
এবি/টিকে