ভুয়া ব্যক্তিকে বন্ধকদাতা সাজিয়ে জাল দলিলের মাধ্যমে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যাংক ঋণ আত্মসাতের অভিযোগে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা ও একটি এনজিওর প্রধান নির্বাহীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রোববার (২৩ নভেম্বর) সকালে দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করেন প্রতিষ্ঠানটির একই কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মুহাম্মদ হামেদ রেজা।
মামলার আসামিরা হলেন- এনজিও নওজোয়ানের প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ ইমাম হোসেন চৌধুরী, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মুরাদপুর শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক কে এম এজাজ ও একই শাখার সাবেক ঋণ কর্মকর্তা কৌশিক রায় চৌধুরী।
মামলার বিষয়টি দেশের একটি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপপরিচালক সুবেল আহমেদ। তিনি বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির সংশ্লিষ্ট ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় নিয়মিত মামলা করা হয়েছে। তদন্তে নতুন কোনো ব্যক্তি বা তথ্য পাওয়া গেলে তাকেও আইনগত আওতায় আনা হবে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, নওজোয়ান এনজিও’র প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ ইমাম হোসেন চৌধুরী ২০১৫ সালে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক মুরাদপুর শাখা থেকে ৫ কোটি টাকা ঋণের আবেদন করেন। এর বিপরীতে জামানত হিসেবে সদস্য ফরিদুল হাসানের নামে একটি জমি বন্ধক দেখানো হয়। প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে, প্রকৃত জমির মালিক ফরিদুল হাসান নন। বরং এক ভুয়া ব্যক্তি ‘ফরিদুল হাসান’ নাম ধারণ করে জাতীয় পরিচয়পত্র ও নকল কাগজপত্র ব্যবহার করে বন্ধকী দলিল সম্পাদন করেন। ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে এই ভুয়া বন্ধকের ভিত্তিতেই ঋণ অনুমোদন হয়।
বন্ধকী জমির প্রকৃত মালিক যাচাই করার দায়িত্ব ছিল শাখা ব্যবস্থাপক কে এম এজাজ এবং ঋণ কর্মকর্তা কৌশিক রায় চৌধুরীর। কিন্তু তারা সরেজমিন যাচাই না করে কেবল মৌখিকভাবে ভুয়া ব্যক্তিকে শনাক্ত করে জাল দলিলকে বৈধ হিসেবে গ্রহণ করেন। ভুয়া ফরিদুল হাসানকে ব্যাংকে উপস্থাপন করেন এনজিও প্রধান ইমাম হোসেন চৌধুরী নিজেই এবং দলিল সম্পাদনের সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাইয়ে সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসের তথ্য থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়, বন্ধকদাতা হিসেবে উপস্থাপিত ব্যক্তি প্রকৃত জমির মালিক নন। ফলে এটি সুস্পষ্ট হয়, ইচ্ছাকৃত প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণ মঞ্জুর ও আত্মসাৎ করা হয়েছে।
কেএন/টিকে