দেশের শীর্ষ গণমাধ্যম প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ, প্রবীণ সম্পাদক নূরুল কবীরকে হেনস্তা এবং ছায়ানটে ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল ১৯।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে সংস্থাটি হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, এসব সহিংসতা ২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশকে মারাত্মকভাবে ধূলিসাৎ করতে পারে।
আর্টিকেল ১৯-এর মতে, গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের ওপর এই হামলাগুলো কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং এটি বাংলাদেশে দীর্ঘদিনের গেড়ে বসা দায়মুক্তির সংস্কৃতির এক ভয়ংকর বহিঃপ্রকাশ। সংস্থাটি মনে করে, যখন অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা হয় না, তখন হামলাকারীরা নতুন উদ্যমে সহিংসতা চালানোর সাহস পায়। এর ফলে সমাজে ভিন্নমত দমনের একটি বিপজ্জনক সংস্কৃতি ক্রমেই স্বাভাবিক হয়ে উঠছে, যা সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকারকে সরাসরি হুমকির মুখে ফেলছে।
বিবৃতিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য স্বাধীন গণমাধ্যম ও মুক্তভাবে মতপ্রকাশের পরিবেশ থাকা অপরিহার্য। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা হামলাকারীদের আরও সাহসী করে তুলছে। যদি এখনই এসব সহিংসতার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ও স্বচ্ছ আইনি ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে ভবিষ্যতে কোনো সাংবাদিক বা নাগরিক নির্ভয়ে কথা বলতে পারবেন না। এমন ভয়ের পরিবেশে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
আর্টিকেল ১৯ মনে করে, দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক ছায়ানটে ভাঙচুর এবং শীর্ষ গণমাধ্যমগুলোর কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত হওয়ার ঘটনাগুলো গণতন্ত্রের জন্য চরম অশনিসংকেত। বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা এই সংঘাতময় পরিবেশকে আরও উসকে দিচ্ছে এবং সুষ্ঠু গণতন্ত্র চর্চার পথ রুদ্ধ করছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সংস্থাটি বলে, দায়মুক্তির সংকট গভীর হওয়ার আগেই সরকারকে কঠোর হতে হবে। গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রতিটি হামলার নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট হওয়ার দায়ভার রাষ্ট্রকেই নিতে হবে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
টিজে/টিএ