শীতকালীন সবজি হলেও টমেটো সারা বছরই পাওয়া যায়। তবে নানা ধরনের পুষ্টি উপাদানে ভরপুর থাকলেও অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে তা উপকারের পরিবর্তে ক্ষতির কারণ হতে পারে।
শুধু তা-ই নয়, কিছু মানুষের ক্ষেত্রে টমেটো এড়িয়ে চলার পরামর্শও দেওয়া হয়।
বেশি টমেটো খেলে অন্ত্রের স্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।
এসিডিটি ও পেট ফোলার মতো সমস্যা এড়াতে টমেটো সীমিত পরিমাণেই খাওয়া উচিত। টমেটো কেন সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত বা কারা এর থেকে দূরে থাকবেন, তা জানাতেই আজকের প্রতিবেদন। চলুন, জেনে নেওয়া যাক—
টমেটো এসিডিক। এতে ম্যালিক এসিড ও সিট্রিক এসিড থাকে।
অতিরিক্ত টমেটো খেলে পাকস্থলীতে এসিডের মাত্রা বেড়ে যায়, যার ফলে বুকজ্বালা, গ্যাস ও এসিড রিফ্লাক্সের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কিডনিতে পাথরের রোগীরা : টমেটোতে ক্যালসিয়াম ও অক্সালেটের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি। যাদের কিডনিতে পাথরের সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে টমেটোর বীজ পাথরের আকার বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই এ ধরনের রোগীদের টমেটো কম খাওয়া উচিত, অথবা বীজ ছাড়িয়ে খাওয়াই ভালো।
জয়েন্টের ব্যথা : টমেটোতে ‘সোলানিন’ নামে একটি অ্যালকালয়েড থাকে। মনে করা হয়, এটি শরীরে প্রদাহ বাড়াতে পারে। যাদের জয়েন্টে ব্যথা বা ফোলা সমস্যা রয়েছে, তাদের টমেটো খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো, কারণ এতে ব্যথা বেড়ে যেতে পারে।
অ্যালার্জি ও ত্বকের সমস্যা : কিছু মানুষের ক্ষেত্রে টমেটো খেলে ত্বকে র্যাশ, চুলকানি বা ফোলাভাবের মতো অ্যালার্জির উপসর্গ দেখা যায়। আগে কখনো টমেটো থেকে অ্যালার্জির অভিজ্ঞতা থাকলে এর সেবন ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
পেট ও হজমের ওপর প্রভাব : অতিরিক্ত টমেটো খাওয়া গাঁট হেলথের জন্য ক্ষতিকর। এতে পেট ফুলতে পারে। টমেটোতে থাকা লেকটিন হজমের পথে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে ডায়রিয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
টমেটো আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং এতে থাকা ভিটামিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের জন্য উপকারী। তবে যেকোনো ভালো জিনিসের মতোই এর ক্ষেত্রেও মাত্রা বজায় রাখা জরুরি।
অতিরিক্ত টমেটো খেলে শরীরের হজম প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হতে পারে এবং ধীরে ধীরে নানা শারীরিক অস্বস্তি দেখা দিতে পারে, যা অনেক সময় আমরা খাবারের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে পারি না। বিশেষ করে যাঁদের আগে থেকেই কিছু শারীরিক সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এই প্রভাব আরো স্পষ্ট হতে পারে।
তাই নিজের শরীরের সংকেতগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে খাদ্যাভ্যাসে সচেতন হওয়া অত্যন্ত দরকার। প্রতিদিনের ডায়েটে বৈচিত্র্য রাখা, সব খাবার পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করা এবং কোনো খাবার খাওয়ার পর অস্বস্তি অনুভব হলে সেটিকে উপেক্ষা না করাই সুস্থ থাকার সবচেয়ে নিরাপদ পথ।
এমোকে/এসএন