বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে জানিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনাকে উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেছে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, এসব ঘটনাকে ‘মিডিয়ার বাড়াবাড়ি’ বা ‘রাজনৈতিক সহিংসতা’ বলে উড়িয়ে দেয়া যাবে না। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গত কয়েকদিনে আমরা একাধিক বিবৃতি দিয়ে বাংলাদেশে প্রচারিত ভ্রান্ত বর্ণনা প্রত্যাখ্যান করেছি।’
রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলি সম্পর্কে আমরা অবগত এবং পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও বলেন, বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিস্টান ও বৌদ্ধসহ সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে যে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্বেষ চলছে, তা গভীর উদ্বেগের বিষয়। আমরা ময়মনসিংহে এক হিন্দু যুবকের সাম্প্রতিক নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই এবং এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার প্রত্যাশা করি।
এদিকে রাজবাড়ীর পাংশায় বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে গণপিটুনিতে অমৃত মন্ডল ওরফে সম্রাট (২৯) নামে একজনের নিহতের ঘটনা ‘দুঃখজনক’ জানিয়ে এটি কোনো সাম্প্রদায়িক হামলা ছিল না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, রাজবাড়ীর পাংশা থানাধীন এলাকায় বুধবার রাতে সংঘটিত একটি দুঃখজনক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।
বিবৃতিতে সরকার বলেছে, পুলিশের তথ্য ও প্রাথমিক তদন্ত থেকে প্রতীয়মান হচ্ছে যে, ঘটনাটি মোটেই সাম্প্রদায়িক হামলা নয়। এটি চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত সহিংস পরিস্থিতির থেকে সৃষ্ট ঘটনা। নিহত ব্যক্তি শীর্ষ সন্ত্রাসী অমৃত মন্ডল ওরফে সম্রাট চাঁদা দাবির উদ্দেশে এলাকায় উপস্থিত হন এবং বিক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতার সঙ্গে সংঘর্ষের এক পর্যায়ে প্রাণ হারান। তিনি ইতিপূর্বে ২০২৩ সালে রুজুকৃত হত্যা এবং চাঁদাবাজির মামলাসহ একাধিক গুরুতর মামলার আসামি ছিলেন। এসব মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও রয়েছে।
এছাড়া সম্প্রতি ভারতের দিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন, কলকাতায় উপ-দূতাবাস এবং শিলিগুড়িতে ভিসা সেন্টার ঘিরে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ও কট্টরপন্থি কয়েকটি সংগঠন বিক্ষোভ এবং প্রধান উপদেষ্টার কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে। এসব ঘটনায় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
টিজে/টিকে