নাজিব রাজাক দুর্নীতির আরেক মামলায় দোষী সাব্যস্ত

মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক আবারও দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। বহুল আলোচিত রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ তহবিল ১-এমডিবি কেলেংকারি সংক্রান্ত আরেকটি মামলায় শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) কুয়ালালামপুর হাইকোর্ট তাকে দোষী ঘোষণা করেন। এটি নাজিবের বিরুদ্ধে ১-এমডিবি সংশ্লিষ্ট দ্বিতীয় বড় মামলার রায়।

৭২ বছর বয়সি নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে এ মামলায় ক্ষমতার অপব্যবহারের চারটি এবং অর্থপাচারের ২১টি অভিযোগ আনা হয়েছিল। মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়- তিনি ১-এমডিবি থেকে প্রায় ২২০ কোটি মালয়েশীয় রিঙ্গিত; যার পরিমাণ প্রায় ৫৩ কোটি ৯০ লাখ মার্কিন ডলার— অবৈধভাবে স্থানান্তর করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা আদালতে জানান, এক দশকেরও বেশি আগে প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী এবং ১-এমডিবির উপদেষ্টা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে নাজিব নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। সেই সময় তিনি মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ তহবিল থেকে বিপুল অর্থ সরাসরি নিজের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবগুলোতে স্থানান্তর করেন বলে অভিযোগ উঠে।

এর আগে ২০২০ সালে ১-এমডিবির প্রায় ৯৯ লাখ ডলার তহবিল আত্মসাতের দায়ে নাজিব রাজাক দোষী সাব্যস্ত হন। ওই মামলায় তাকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়, যার কার্যকারিতা শুরু হয় ২০২২ সাল থেকে। পরে তার সাজা কমিয়ে ছয় বছর করা হয়।

বর্তমান মামলাটি নাজিবের বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলোর মধ্যে দ্বিতীয়টিতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার ঘটনা। বিশ্লেষকদের মতে, এটি এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে হওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মামলা। কারণ এতে সরাসরি ১-এমডিবি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এবং অত্যন্ত বড় অঙ্কের অর্থ জড়িত ছিল।

এ মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া চলে প্রায় সাত বছর। শুনানিকালে নাজিবসহ মোট ৭৬ জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়।

নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এশিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মালয়েশিয়া বিষয়ক সম্মানসূচক গবেষণা সহযোগী ব্রিজেট ওয়েলশ বলেন, এ মামলায় একাধিকবার বিলম্ব হয়েছে এবং বিষয়টি সাধারণ মানুষের জন্য বোঝা অত্যন্ত জটিল।

আল–জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওয়েলশ আরও বলেন, এসব আর্থিক অপরাধ ছিল বহুস্তরবিশিষ্ট এবং পুরো বিচারিক প্রক্রিয়াটি ছিল দীর্ঘ ও বিস্তৃত।

ইউটি/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বিএনপিতে যোগ দিয়ে ধানের শীষে ভোট করবেন রাশেদ খান: নুর Dec 26, 2025
img
জনপ্রিয় ফিলিস্তিনি অভিনেতা মোহাম্মদ বকরী আর নেই Dec 26, 2025
img
মেঘনায় মিলল ২৩ কেজি ওজনের কোরাল Dec 26, 2025
img
রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে বড় নেতারা কেন বাস ব্যবহার করেন? Dec 26, 2025
img
জাতীয় স্মৃতিসৌধে তারেক রহমানের শ্রদ্ধা নিবেদন Dec 26, 2025
img
চারে ব্যাটিং প্রসঙ্গে ওপেনার ইমনের মন্তব্য Dec 26, 2025
img
মায়ানমারের সাধারণ নির্বাচন ঘিরে সমালোচনার ঝড় Dec 26, 2025
img
ঘন কুয়াশার কারণে আরিচা-কাজীরহাট নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ Dec 26, 2025
img
৫ লাখ সন্ন্যাসী নিয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস ঘেরাওয়ের হুমকি বিজেপি নেতার Dec 26, 2025
img
বান্দরবানে ভূমিকম্প অনুভূত Dec 26, 2025
img
মায়ানমারে পাচারকালে বিপুল পরিমাণ মশারি ও নৌকার প্রপেলার জব্দ, আটক ৫ Dec 26, 2025
img
সম্রাট বাহিনীর প্রধানের প্রাণহানির ঘটনায় মামলা Dec 26, 2025
img
পর্তুগালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন : ডানপন্থি দল চেগার জোরালো প্রচারণা Dec 26, 2025
img
জাতীয় স্মৃতিসৌধে পৌঁছেছেন তারেক রহমান Dec 26, 2025
বিদেশে গিয়েও দেশের প্রতি টান কেয়া পায়েলের Dec 26, 2025
দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব Dec 26, 2025
আমাদের জন্য জরুরী একটি বিধান | ইসলামিক জ্ঞা Dec 26, 2025
ইসরায়েলে ভয়াবহ সাইবার হামলা চালাল ইরান Dec 26, 2025
সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ঘিরে বিএনপির দুঃখপ্রকাশ Dec 26, 2025
সারা দেশের সদস্যদের সামনে যে বক্তব্য রাখলেন শিবির সভাপতি Dec 26, 2025