শৈশবে অপহৃত হওয়ার দীর্ঘ ২১ বছর পর ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে নিজের আসল বাবা-মায়ের খোঁজ পেয়েছেন চীনের এক যুবক। জন্মদাতার কাছে ফিল আসার পর তিনি বড় হয়ে ওঠা পরিবারের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন এবং নিজের অর্জিত গাড়ি-বাড়িও ত্যাগ করেছেন। ২৬ বছর বয়সী ওই যুবকের নাম পেং চংচং।
ঘটনাটি শুরু হয়েছিল দুই দশক আগে। পেংয়ের বয়স যখন মাত্র চার বছর, তখন তাঁর পরিবার বেইজিংয়ে বসবাস করত। একদিন একটি বাজারের কাছে খেলার সময় তাঁকে অপহরণ করা হয়। তাঁর বাবা-মা দীর্ঘ ২১ বছর ধরে ছেলের খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরেছেন, পোস্টার লাগিয়েছেন এবং পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন।
অন্যদিকে, অপহরণকারীরা পেং-কে পূর্ব চীনের জিয়াংসু প্রদেশের একটি পরিবারের কাছে বিক্রি করে দেয়। সেখানে তিনি 'ঝাং কুন' নামে বড় হন।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে পুলিশের ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায়, পেং-এর আসল বাড়ি দক্ষিণ-পূর্ব চীনের জিয়াংসি প্রদেশে। এরপর তিনি বেইজিংয়ে গিয়ে তাঁর বাবা-মা ও দুই বোনের সাথে দেখা করেন। ২১ বছর পর ছেলেকে ফিরে পেয়ে গ্রামবাসীরা আতশবাজি ও ভোজের মাধ্যমে তাঁকে স্বাগত জানায়।
পুনর্মিলনের পর পেং এক অভাবনীয় সিদ্ধান্ত নেন। জিয়াংসু প্রদেশে তাঁর একটি গাড়ি, নিজের কেনা বাড়ি এবং ভালো চাকরি ছিল। কিন্তু তিনি তাঁর আগের জীবন এবং লালন-পালনকারী পরিবারের (যাদের 'ক্রেতা' হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে) সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেন। তিনি তাঁর ঘর ও গাড়ি ফিরিয়ে দেন এবং বলেন, এগুলো আমার নয়।
বর্তমানে তিনি তাঁর আসল বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকছেন এবং তাঁদের দেশভ্রমণে নিয়ে যাচ্ছেন। পেং বলেন, "খন আমি সত্যিকারের ঘরের অনুভূতি পাচ্ছি। বাবা-মায়ের মমতা আর বোনদের পাশে পেয়ে আমার ভেতরে এক গভীর শান্তির জন্ম হয়েছে।
নিখোঁজ শিশুদের জন্য কাজ পেং এখন নিখোঁজ শিশুদের খুঁজে পেতে কাজ করা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। নিজের প্রথম লাইভ-স্ট্রিম থেকে উপার্জিত সমস্ত অর্থ তিনি 'বেবি কাম হোম' নামের একটি দাতব্য সংস্থাকে দান করেছেন। তিনি মনে করেন, অপহৃত শিশুদের পরিবার যে কষ্ট পায়, তা কোনো অর্থ দিয়ে লাঘব করা সম্ভব নয়।
টিজে/টিএ