পেরুর অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র মাচু পিচুকাছে মুখোমুখি দুটি ট্রেনের সংঘর্ষে একজন ট্রেনচালক নিহত হয়েছেন এবং অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অন্তত ২০ জনের অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
স্থানীয় সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, মঙ্গলবার প্রাচীন ইনকা নগরীর দিকে যাওয়া একক রেলপথে এই দুর্ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অন্তত ২০টি অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয় এবং আহতদের কাছের শহর কুসকোর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পেরুতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় কয়েকজন মার্কিন নাগরিক আহত হয়েছেন। তবে এখনো পর্যন্ত আহত বা নিহতদের পরিচয় আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেনি পুলিশ।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম পেরু২১ জানিয়েছে, দুর্ঘটনাস্থলে এখনো শতাধিক পর্যটক আটকে রয়েছেন। দুর্গম পাহাড়ি ভূপ্রকৃতির কারণে তাদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
রয়টার্সকে এক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানান, আহতদের মধ্যে অন্তত ২০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। দুর্ঘটনাটি ঘটে অলানতায়তাম্বো স্টেশন ও আগুয়াস কালিয়েন্তেসের মধ্যবর্তী রেলপথে।
আগুয়াস কালিয়েন্তেসই মাচু পিচুসবচেয়ে কাছের শহর। এই দুই স্টেশনের মধ্যে ট্রেনযাত্রায় সাধারণত প্রায় ৯০ মিনিট সময় লাগে।
দুর্ঘটনাকবলিত দুটি ট্রেনের একটি পরিচালনা করছিল পেরুরেইল এবং অন্যটি ইনকা রেল। পেরুরেইল এক বিবৃতিতে জানায়, ‘আমরা গভীরভাবে দুঃখিত।’ প্রতিষ্ঠানটি আরো জানায়, তাদের কর্মীরা তাৎক্ষণিকভাবে ট্রেনচালক, কন্ডাক্টর ও যাত্রীদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন। এখনো পর্যন্ত দুর্ঘটনার সুনির্দিষ্ট কারণ জানা যায়নি।
এই দুর্ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটল, যখন ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান মাচু পিচুতে যাতায়াত ব্যবস্থাপনা নিয়ে পরিবহন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বিরোধ চলমান।
স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অভিযোগ, পরিবহন লাইসেন্স প্রদানের প্রক্রিয়া যথেষ্ট স্বচ্ছ নয়।
মাচু পিচুতে যাওয়ার ট্রেন ও বাসের টিকিটের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি এবং সীমিত যাতায়াত ব্যবস্থার কারণে এই ব্যবসা অত্যন্ত লাভজনক। ১৫শ শতকে পেরুর আন্দিজ পর্বতমালায় নির্মিত ইনকা সভ্যতার এই নগরীটি আধুনিক বিশ্বের সাত আশ্চর্যের একটি হিসেবে পরিচিত। পর্যটকেরা ট্রেন ও বাসে অথবা নিবন্ধিত ট্যুর অপারেটরের মাধ্যমে ইনকা ট্রেইল ধরে হেঁটেও মাচু পিচুতে পৌঁছাতে পারেন।
পর্যটনের চাপ নিয়ন্ত্রণ ও স্থাপনাটি সংরক্ষণের লক্ষ্যে ২০১১ সালে দৈনিক দর্শনার্থীর সংখ্যা সীমিত করা হলেও অতিরিক্ত পর্যটন নিয়ে উদ্বেগ এখনো রয়ে গেছে।
টিজে/এসএন