আ.লীগ সরকারের নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার পিরোজপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহম্মেদ রুবেলকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মামলার আসামি করা হয়েছে। ঘটনাটি পিরোজপুরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে এবং রাজনৈতিক মহলে চরম নিন্দার ঝড় বইছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রুবেল পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া ঘোষের টিকিকাটা গ্রামের মহারাজ মিয়ার ছেলে। দীর্ঘ দিন স্ব-পরিবারে মঠবাড়িয়া পৌর শহরের ৭ ওয়ার্ডে বসবাস করেন। যে কারণে এ এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা ও ভোটার হয়েছেন তিনি।
এদিকে মামলা সূত্রে জানা গেছে, সোহেল আহম্মেদ রুবেল এর অস্থায়ী ঠিকানা দেখানো হয়েছে উত্তরা ১নং সেক্টরের ১০নং সড়কে। ছাত্রদল সূত্রে জানা যায়, সোহেল আহম্মেদ রুবেল মঠবাড়িয়া পৌর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পিরোজপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক। এছাড়াও, রুবেল মঠবাড়িয়া পৌর বিএনপির ৭নং ওয়ার্ড কমিটির সাবেক সদস্য।
বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের সূত্র থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারী আওয়ামী লীগের হামলার শিকার হন রুবেল। এসময় সন্ত্রাসীরা পিটিয়ে তার ডান পা ভেঙে দেয়। খবরটি সেসময় গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকা প্রকাশ করে।
এদিকে মামলা সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর সদর উপজেলার আরিচপুর নিশীখা এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম চানুর মেয়ে মোসা. সালমা খাতুন বাদী হয়ে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিজ্ঞ মুখ্য মহানগর হাকিম মহোদয়ের আদালতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২০২ জন নামীয় এবং অজ্ঞাত আরও ৩০০ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার ওসিকে এজাহারের নির্দেশ দেন। গত ১৪ নভেম্বর উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি মোহাম্মদ রাজু মামলাটি এজহার হিসেবে গণ্য করেন। এ মামলায় সোহেল আহমেদ রুবেল ১৩২ নম্বর আসামি।
মামলার বিবরণে দেখা যায়, গত ৫ আগস্ট ২৪ তারিখ আনুমানিক সকাল ৯টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে সালমা খাতুন এর স্বামী কবির হোসেন এবং বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ স্বৈরাচার সরকার পতনের একদফা দাবিতে উত্তরার বিভিন্ন সড়কসহ আমির কমপেক্স মার্কেটের পেছনের রাস্তায় অবস্থান করছিল। এ সময় নামীয় আসামিগণসহ আজ্ঞাতনামা আসামিগণ প্রাণঘাতি মারাত্বক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হত্যার উদ্দেশে দাঙ্গা সংগঠিত করে ছাত্র-জনতার ওপর অতর্কিতভাবে গুলি চালায়।
এ সময় সালমা খাতুনের স্বামী মো. কবির (৫০) সহ অনেকেই গুলিবিদ্ধ ও মারাত্মক আহত হয়। গুরুতর আহত কবিরকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ছাত্রদল নেতা সোহেল আহম্মেদ রুবেল জানান, আমি জাতীয়তাবাদী রাজনীতি সঙ্গে জড়িত, যেখানে গত ১৭ বছর জনগণের দাবিসহ নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায়ে রাজপথে বারবার আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছি, সেখানে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সঙ্গে হত্যা মামলার আসামি হলাম আমি। ৫ তারিখে আমি মঠবাড়িয়ায় আনন্দ মিছিল করেছি, যার স্থীর ও ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রয়েছে। মামলার বাদি আমাকে চিনেও না, জানেও না। একটি কুচক্রী মহল ষড়যন্ত্র করে আমাকে মামলায় জড়িয়েছেন। আমি দলের নীতি-নির্ধারকদের হস্তক্ষেপ কামনা করি।
এ বিষয়ে মঠবাড়িয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক (ভারপ্রাপ্ত) মো. শামীম মিয়া মৃধা বলেন, সোহেল আহম্মেদ রুবেল ছাত্রদলের একজন সক্রিয় নেতা ছিলেন। তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়া দুঃখজনক। এ বিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি মোহাম্মদ রাজু বলেন, বিজ্ঞ আদালতের আদেশে মামলাটি এজাহারভুক্ত করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসএস/এসএন