ছবি: সংগৃহীত
কান চলচ্চিত্র উৎসবের ৭৮তম আসরে অফিশিয়াল সিলেকশন পেয়েছে আদনান আল রাজীব পরিচালিত ‘আলী’। কানের মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে জায়গা করে নেওয়া এটাই প্রথম বাংলাদেশি কোনো স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র!
কানে বাংলাদেশি এই সিনেমার অফিশিয়াল সিলেকশনে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ডাক পায় টিম ‘আলী’। মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে সোমবার (২৮ এপ্রিল) সচিবালয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন ‘আলী’ নির্মাতা ও সংশ্লিষ্ট কলাকুশলী সবাই। এদিন তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
‘আলী’র এমন অর্জন নিয়ে সংস্কৃতি উপদেষ্টা জানান, টিম ‘আলী’-কে ধন্যবাদ জানাতেই মন্ত্রণালয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে সদ্য মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ৪৭তম আসরে মোহাম্মদ নূরুজ্জামান পরিচালিত বাংলাদেশি ছবি ‘মাস্তুল’-এর বিশেষ স্বীকৃতি পাওয়ায়ও অভিনন্দন জানান।
এ সময় ফারুকী বলেন, “তরুণ নির্মাতারা দেশ-বিদেশে তাদের কাজ দিয়ে সম্মান বয়ে আনছেন, আমার মনে হয় এ ক্ষেত্রে সরকারের তরফ থেকে ধন্যবাদটুকু বললেও তারা আনন্দিত হয়। তেমনি আসন্ন কান চলচ্চিত্র উৎসবে মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘আলী’ নির্বাচিত হওয়ায় টিমকে ধন্যবাদ জানাতেই মন্ত্রণালয়ে ডেকেছি।
সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, যারা খোঁজখবর রাখেন, তারা জানেন যে এ রকম উৎসবে জায়গা পেলে পৃথিবীর যেকোনো দেশ কী পরিমাণে অ্যাপ্রিসিয়েট করে। ধরা যাক সাউথইস্ট এশিয়ার একটি দেশ, কানের অফিশিয়াল সিলেকশনে হয়তো তাদের একটা শর্টফিল্ম আছে। কিন্তু ওই একটা শর্টফিল্মের জন্য ওদের যে ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন, তারা একটা ডেলিগেশন পাঠায় ওখানে এবং সেই ডেলিগেশন ওখানে লাঞ্চ, ডিনার এবং বিভিন্ন পার্টি হোস্ট করে থাকেন। এটা এ জন্যই করে, যেন তাদের দেশের অন্য ফিল্ম মেকাররা নেটওয়ার্ক তৈরি করতে পারেন।
এই যে সফট পাওয়ারকে এক্সপ্লোর করার যে কাজ, আমরা সেই অর্থে খুব একটা করিনি। তবে আমরা এখন থেকে এই কাজটা ধীরে ধীরে শুরু করতে চাই।”
এরপর ফারকী বলেন, ‘আলী’-কে দিয়ে আমরা এই কাজটি শুরু করতে চাই। শর্টফিল্ম ‘আলী’ যে কান ফিল্ম ফেস্টিভালে যাচ্ছে, সেই টিমের সদস্যদের সংস্কৃতি মন্ত্রণলায়ের পক্ষ থেকে যাতায়াত খরচ, থাকা-খাওয়ার ব্যয় বহন করবে। পাশাপাশি ‘আলী’-তে যে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছে
তার প্লেন ভাড়া সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সরাসরি ব্যবস্থা করছে না, তবে আমরা এটি নিয়ে বেসরকারি একটি উদ্যোগ নিচ্ছি।
ফলে আলীও এই টিমের সঙ্গে যাবে।”
দেশের বাইরে সংস্কৃতি যে কোনো ক্ষেত্র দেশের ইমেজ বৃদ্ধি করলে পাশে দাঁড়ানোর কথাও জানান ফারুকী। বললেন, শুধুমাত্র কানের মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে ‘আলী’ মনোনীত হয়েছে বলে না, অবশ্যই এটা বড় অর্জন; তবে আমরা মনে করি সামনে বাংলাদেশের সংস্কৃতি সেটা যেকোনো ক্ষেত্রে হোক- পৃথিবীর যেকোনো দেশে বাংলাদেশের সংস্কৃতি আমাদের ইমেজ যদি বৃদ্ধি করে; এ রকম যেকোনো কাজে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় পাশে থাকবে। এটা ট্রাডিশনাল সংস্কৃতি যেমন নাচ, গান, সিনেমারও বাইরে যদি আর্কিটেক্চারও যদি ‘অ্যামাজিং অ্যাচিভমেন্ট’ করে; আমরা সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে সেটা উদযাপন করব।
প্রসঙ্গত, আগামী ১৩ মে ফ্রান্সের কান শহরে বসছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ চলচ্চিত্র উৎসব। ৭৮তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে ২৪ মে জুরি প্রেসিডেন্ট মারেন আদের নেতৃত্বে বিজয়ী চলচ্চিত্রকে স্বল্পদৈর্ঘ্য শাখার পাম দ’ওর প্রদান করা হবে।
আরএম/টিএ