সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নরেন্দ্র মোদির আগ্রাসন পাকিস্তানকে ভারতের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন। বিশ্বকাপজয়ী সাবেক এই তারকা ক্রিকেটার বর্তমানে দেশটির একটি কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
সেখানেই আইনজীবীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় দেওয়া বার্তায় তিনি একথা বলেন।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন— ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগ্রাসী মনোভাব পাকিস্তানের জনগণকে এক কণ্ঠে ভারতবিরোধী অবস্থানে ঐক্যবদ্ধ করেছে। তিনি মোদির যুদ্ধপ্রবণ অবস্থানের তীব্র ভাষায় নিন্দাও জানান।
মঙ্গলবার আদিয়ালা কারাগারে আইনজীবীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় ইমরান খান বলেন, “যদিও আমরা এই ভুয়া সরকারকে প্রত্যাখ্যান করি, তবুও গোটা জাতি আজ একতাবদ্ধ হয়ে মোদির যুদ্ধপ্রবণতা এবং তার বিপজ্জনক উচ্চাকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। মোদির এই মনোভাব পুরো অঞ্চলের শান্তির জন্য হুমকি।”
ইমরান খানের এই বক্তব্য পিটিআইয়ের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত হয়।
ইমরান খান বলেন, ভুয়া ফর্ম-৪৭ এর মাধ্যমে গঠিত অবৈধ সরকার দেশের জনগণকে বিভক্ত করেছে। কিন্তু মোদির সাম্প্রতিক আগ্রাসী আচরণ উল্টো দেশের জনগণকে জাতীয় স্বার্থে একত্রিত করেছে।
কাশ্মির প্রসঙ্গে ভারতকে দোষারোপ পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, কাশ্মীরের পেহেলগাম সম্প্রতি ঘটে যাওয়া হামলার জন্য তদন্ত বা আত্মসমালোচনার বদলে মোদি সরকার পাকিস্তানকে দায়ী করছে।
তিনি বলেন, “২০১৯ সালের পুলওয়ামা ঘটনার সময়ও আমরা সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছিলাম, কিন্তু ভারত কোনও প্রমাণ দিতে পারেনি। আমি তখনই বলেছিলাম, ভবিষ্যতে আবার এমনই ঘটবে— আর সেটাই আজ পেহেলগাম ঘটনার পর দেখা যাচ্ছে।”
ইমরান খান কাশ্মীরিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারকে সবসময় সমর্থন করেছেন বলে উল্লেখ করেন এবং বলেন, “জাতিসংঘের প্রস্তাবে স্বীকৃত কাশ্মীরিদের অধিকার রক্ষার জন্য আমরা বরাবরই আওয়াজ তুলেছি।”
তিনি বলেন, ভারতের বর্তমান সরকার আরএসএস-এর চরমপন্থি ভাবধারায় পরিচালিত, যা শুধু এই অঞ্চলের নয়, গোটা বিশ্বের জন্য বিপজ্জনক। বিশেষ করে ভারতের সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের পর কাশ্মীরে দমন-পীড়ন বেড়ে গেছে, যার ফলে কাশ্মীরিদের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা আরও জোরালো হয়েছে।
ইমরান খান পেহেলগাম হামলায় নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও সহানুভূতি প্রকাশ করেন এবং বলেন, “দুঃখজনকভাবে, এই ঘটনার প্রকৃত তদন্তের বদলে ভারত বরাবরের মতোই পাকিস্তানকে দায়ী করছে।”
এসএম/টিএ