রাশিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে ভাইয়ের মতো লড়াই করল উত্তর কোরিয়া!

নির্লিপ্ত পশ্চিমাদের বিপরীতে রাশিয়ার পাশে ভাইয়ের মতো দাঁড়িয়েছে উত্তর কোরিয়া। ইউক্রেনে রুশ ভূখণ্ড পুনর্দখলের যুদ্ধে প্রাণ দিয়ে কৃতজ্ঞতা অর্জন করেছেন কিম জং উনের সৈন্যরা। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন জানিয়ে দিয়েছেন, কোরিয়ান সেনারা সংহতি ও সত্যিকারের বন্ধুত্বের ভিত্তিতে রাশিয়ার পক্ষে লড়াই করেছে।

যার ভাইয়ের মত ভাই আছে, তার চেয়ে নাকি শক্তিশালী কেউ নেই-এ কথার বাস্তব উদাহরণ যেন হয়ে উঠেছে উত্তর কোরিয়া। রাশিয়ার ডাকে সাড়া দিয়ে ইউক্রেন এবং পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেয় কিম জং উনের সেনারা। তাদের কাঁধে ছিল ইউক্রেনের দখলে থাকা কুরস্ক অঞ্চল মুক্ত করার দায়িত্ব। প্রাণ দিয়ে রুশদের বিশ্বাসের মর্যাদা রেখেছে উত্তর কোরিয়ার সৈন্যরা।

রুশ সেনাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কুরস্ক পুনর্দখল করেছে তারা। রাশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে এখন চলছে উত্তর কোরিয়ার জন্য জয়ধ্বনি। বিশ্লেষকদের মতে, পশ্চিমাদের স্বার্থের রাজনীতির বিপরীতে এমন সত্যিকারের সহযোগিতা নজিরবিহীন। মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোট এখন দ্বিধান্বিত, ইউক্রেনের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক আর আগের মতো নেই।

এই কৌশলগত সফলতাকে নতুন মাত্রা দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। কুরস্ক মুক্ত করায় উত্তর কোরিয়ার সেনাদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “রাশিয়ার কোরিয়ান বন্ধুরা সংহতি, ন্যায়বিচার এবং প্রকৃত বন্ধুত্বের অনুভূতির ভিত্তিতে কাজ করেছে।” ক্রেমলিনের এক বিবৃতিতে এমন মন্তব্য জানানো হয়। পুতিন সরাসরি কৃতজ্ঞতা জানান কিম জং উন ও তার সেনাদের প্রতি।

সোমবার প্রথমবারের মতো পিয়ংইয়ং স্বীকার করে যে, রাশিয়ায় সরাসরি লড়াই করছে উত্তর কোরিয়ার সৈন্যরা। মস্কো দাবি করেছে, ইউক্রেনীয় বাহিনীর দখলে থাকা কুরস্ক অঞ্চলের শেষ গ্রামটিও পুনর্দখল করা হয়েছে। রুশ সেনাদের পাশাপাশি কিম জং উনের সেনারাও এই অভিযানে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয় রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ। ২০২৩ সালের আগস্টে হঠাৎ কুরস্কের বড় একটি অংশ দখলে নেয় ইউক্রেনীয় বাহিনী। এতে পুতিন সরকার চাপে পড়ে যায় এবং এরপর থেকে শুরু হয় পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনা। শনিবার এক ভিডিওতে দেখা যায়, পুতিনের হাতে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন তুলে দেন রুশ সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ ভ্যালরি গেরাসিমভ। তিনি জানান, “উত্তর কোরিয়ার সেনারা পেশাদারিত্ব, সাহস এবং বীরত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে।”

ইউক্রেনীয় সূত্র অনুযায়ী, বর্তমানে রাশিয়ায় প্রায় ১৪,০০০ উত্তর কোরিয়ান সৈন্য অবস্থান করছে। যুদ্ধের শুরুতে সাজোয়া যান ও ড্রোন ব্যবহারে অদক্ষতার কারণে কিছু ক্ষতি হয়। তবে পরে কিমের সেনারা পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়।

শুধু সৈন্য নয়, রাশিয়াকে সামরিক সরঞ্জাম দিয়েও সহায়তা করেছে উত্তর কোরিয়া। কামানের গোলা, রকেট উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করেছে তারা। এমন অকৃত্রিম সহযোগিতায় রাশিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।

আরএম/টিএ
 

Share this news on: