একপাশে স্কোরলাইন ৩-৩। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল। বার্সেলোনা বনাম ইন্টার মিলান। আর ঠিক মাঝখানে দাঁড়িয়ে এক কিশোর—হলুদ চুল, চোখে স্বপ্ন, নাম লামিন ইয়ামাল। বয়স মাত্র ১৭, অথচ পারফরম্যান্সে তিনি যেন সময়ের অনেক ঊর্ধ্বে।
ম্যাচের শুরুতে ইন্টার মিলান যখন দ্রুত ২-০ গোলে এগিয়ে যায়, তখন অনেকেই ভাবছিলেন, ‘এই বুঝি শেষ!’ কিন্তু না, ইয়ামালের একক কৃতিত্বে ঘুরে দাঁড়ায় বার্সা। ২৪ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোল করে ইতিহাস গড়েন তিনি—চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালে সবচেয়ে কম বয়সে গোল করার রেকর্ড এখন তার দখলে।
ইন্টার কোচ সিমোন ইনজাগি পর্যন্ত থমকে গেছেন ইয়ামালের খেলা দেখে। ম্যাচ শেষে সরল স্বীকারোক্তি, ‘প্রতি ৫০ বছরে এমন প্রতিভা জন্মায়। তাকে আটকানোই ছিল আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’ এমনকি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তারকা গারনাচো টুইট করে ইয়ামালকে বললেন ‘বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়’! আর আর্লিং হলান্ড তো রীতিমতো মুগ্ধ: “This guy is incredible!”
তবে এই উন্মাদনার মাঝেও বাস্তবতায় ফিরিয়ে আনলেন বার্সেলোনা কোচ হান্সি ফ্লিক। তিনি সতর্ক করে ইয়ামালকে চ্যালেঞ্জ দিলেন, ‘হ্যাঁ, ইয়ামাল অসাধারণ, কিন্তু সামনে এখনও অনেক পথ বাকি। গুরুত্বপূর্ণ হলো, সে যেন এই ফর্ম ধরে রাখে। বড় ম্যাচে সে নিজেকে প্রমাণ করছে—এটাই দরকার।’ এরপর আবার একগাল হেসে যোগ করলেন, ‘তবে হ্যাঁ, ও একজন জিনিয়াস, নিঃসন্দেহে।’
নিজের সাফল্যে খুব একটা ভেসে যাচ্ছেন না ইয়ামালও। ম্যাচ শেষে সিএসবি স্পোর্টসকে বলেন, ‘আমি শুধু উপভোগ করার চেষ্টা করি। কিছু ভাবি না, শুধু খেলার আনন্দটাই নিই। এখনও আমি কিছুই করিনি—আরও অনেক কিছু করতে হবে।’
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এরকম ‘ম্যাজিকাল নাইট’ খুব বেশি হয় না। আর যখন সেটির কেন্দ্রবিন্দু হয় একজন ১৭ বছরের কিশোর, তখন তা হয়ে যায় স্মরণীয়। হ্যাঁ, এই রাতটা ইয়ামালের জন্য, বার্সেলোনার জন্য—এবং ফুটবল ইতিহাসের পাতায় নতুন একটি অধ্যায়ের জন্য।
আরআর/এসএন