বিরোধের জেরে এক মাঝিকে হত্যার অভিযোগ

মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলায় পূর্ববিরোধের জের ধরে সানা মাঝি (৪২) নামের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১ মে) রাত ৯টার দিকে মুন্সীগঞ্জ সদরের মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের মধ্য মাকুহাটি তালগাছতলা রাস্তার ওপর এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী মধ্য মাকোহাটি গ্রামের মাঝিবাড়ির মৃত মোহাম্মদ মাঝির ছেলে।

পরিবার, স্থানীয় ও থানা সূত্রে জানা যায়, এলাকায় রাজনৈতিক আধিপত্যের কারণে গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে ভুক্তভোগী তার পরিবার নিয়ে পার্শ্ববর্তী বজ্রযোগিনী ইউনিয়নের ডেকরাপাড়া গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন।

গত ১ মে আনুমানিক বেলা ৩টার দিকে সানাকে তার বর্তমান বাসস্থান ডেকরাপাড়া থেকে তার পূর্ব পরিচিত স্বাধীন নামের একজন ডেকে নিয়ে যান। এর পর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

একই দিন রাত অনুমান ৯টার মধ্য মাকুহাটি বাবু মাঝির বাড়িতে ডাকাতি করতে গেছে মর্মে সন্দেহ করে স্থানীয় লোকজন মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে জড়ো করে সানাকে গণপিটুনি দিয়ে মেরে ঘটনাস্থলে রাস্তার ওপর ফেলে রাখে। তারা তার শরীরের সঙ্গেই একনালা একটি শর্টগান ও দুই রাউন্ড কার্তুজ রেখে দেয়।

পরবর্তীতে তাকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুতের পর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়। এ বিষয়ে মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মধ্য মাকুহাটি মাঝিবাড়ির বাবু মাঝির পরিবারের সঙ্গে সানা মাঝির পরিবারের দীর্ঘদিনের শত্রুতা ছিল।

১৯৯৭ সালে সানা মাঝির বাবা মোহাম্মদ মাঝিকে মেরে ফেলেছিল বাবু মাঝি ও স্বাধীন মাঝির ভাই শিপন মাঝি। এর প্রতিশোধ হিসেবে ২০০১ সালে হত্যার শিকার হন শিপন মাঝি। তার ধারাবাহিকতায় এ হত্যা করা হয়েছে।

সানা মাঝির স্ত্রী ফাতেমা বেগম বলেন, ‘বাবু মাঝি এবং তার ভাই স্বাধীন মাঝের অত্যাচারে আমরা গ্রাম থেকে চলে গিয়ে পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন বজ্রযোগিনীতে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতাম। সেখান থেকে স্বাধীন মাঝি ডেকে এনে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে ডাকাত বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।’

মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি সাইফুল আলম বলেন, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ২০ মিনিটের দিকে সংবাদ পাই যে, মধ্য মাকুহাটি তালগাছতলা রাস্তায় স্থানীয় লোকজন একজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে একনালা শর্টগানসহ ডাকাতি করাকালে আটক করে রেখেছে। ওই সংবাদের ভিত্তিতে আমিসহ ফোর্স ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পাই রক্তাক্ত অবস্থায় এক ব্যক্তি অচেতন হয়ে পড়ে আছেন এবং তার শরীরের সঙ্গে একটি একনালা শর্টগান ও দুটি কার্তুজ আছে।’

এসএম/টিএ




Share this news on:

সর্বশেষ