বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও মৌলভীবাজার ৩ আসনের সাবেক এমপি এম নাসের রহমান বলেছেন, ‘প্রায় নয় মাস আগে দেশে একটা গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। যার মাধ্যমে সাড়ে পনেরো বছরের ফ্যাসিস্ট স্বৈরশাসক ডাইনি, খুনী হাসিনার পতন হয়েছে। আজকে আমরা ভারতের কব্জা হতে স্বাধীন ও মুক্তিপ্রাপ্ত। স্বাধীন বাংলাদেশ ফিরে পেয়েছি আমরা।
৭১ সালে পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা পেয়েছিলাম, আর ২০২৪ সালে ভারতের প্রচ্ছন্ন কব্জা থেকে আমরা স্বাধীন হয়েছি। হাসিনার শেষ দিন পর্যন্ত ভারতের সম্পূর্ণ আধিপত্য ছিল। ভারতের এই আধিপত্যবাদ উপড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে। সেই সঙ্গে রেজিম হাসিনার পতনের সঙ্গে পতন হয়েছে ফ্যাসিস্ট দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের।’
শনিবার (৩ মে ) বিকেলে কাগাবালাবাজারে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ৪ নং আপার কাগাবালা ইউনিয়ন বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আছে কী এখন দেশে? আওয়ামী লীগ কী আবার ফেরত আসতে চান? গুন্ডা পার্টি, বাটপার পার্টি, দেশের সম্পদ লুটেরর পার্টির নাম কী? সেটার নাম হলো আওয়ামী লীগ। যতো গুন্ডা বাটপার জনগণের সম্পদ লুটপাটকারির দল হলো আওয়ামী লীগ। কোনো দেশপ্রেমিক ভালো মানুষ আওয়ামী লীগ করতে পারে না।
দুষ্কর্ম্মের কারণে এরা বিলীন। এরা গণদুশমনের দলে পরিণতি হয়েছে। কোন ভদ্রলোক, ভালো মানুষ আওয়ামী লীগ করার প্রশ্নই ওঠে না।’
নাসের রহমান বলেন, যে দলের নেতারা দেশ থেকে পালিয়ে গেছে, সে দল বাংলাদেশের দল নয়। যে দলের নেত্রী দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে, পুরো গোষ্ঠী সাথে নিয়ে পালিয়ে গেছে এটা কোন বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক দল হতে পারে না।
ওই দলের নেত্রী বলতেন তারা হলো স্বাধীনতার চেতনার কান্ডারী। নেতা ছিল শেখ মুজিবুর রহমান। তার দুই মেয়ে নাতীপুতি সব কোথায়? একজনও দেশের ভেতরে নাই। এমনকি তাদের কেউ বাংলাদেশের নাগরিকও নয়।
অথচ এরাই এদেশের মানুষকে নিয়ে দুই নম্বরি রাজনীতি করে দেশটাকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়ে পলায়ন করেছে। তাই এখন সময় এসেছে দেশের মানুষের আত্মউপলব্ধি করার। যে আমরা আগামীতে কি করব। কোন পথে হাঁটব। তবে এটা ঠিক একটা দেশে দুইটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল না থাকলে রাজনীতি হয় না। হাসিনার দুঃশাসনের কারণেই এখন আওয়ামী লীগ গর্তের তলে পড়ে গেছে। তাদের আগামী নির্বাচনে আর অংশ গ্রহণের সুযোগ নেই। আর আগামী নির্বাচনে যদি আওয়ামী লীগ আসেও কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ কোনো স্বৈরাচারী গণহত্যাকারী দলকে ভোট দেবে না।’
নাসের রহমান আরো বলেন, দেখবেন একটা দলের নেতা বিরাট বিরাট বয়ান করে বেড়ান। আজকে এই কথা তো কালকে ওই কথা। মনে হয় যেন মানুষরে এমন এমন নসিহত দিয়ে যাচ্ছেন যার শেষ নাই। এরা ক্ষমতায় এলে দেশটা ধবংস করে দেবে। সেজন্য জাতীয় নির্বাচন আগে না স্থানীয় নির্বাচন আগে, এ নিয়ে নানান কথা বলছে।’
কাগাবালা ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক ডা. আব্দুল আছাদ এর সভাপতিত্বে যুগ্ম আহবায়ক কবির উদ্দিনের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও বর্তমান আহবায়ক কমিটির সদস্য আলহাজ্ব আব্দুল মুকিত, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য বকসি মিসবাউর রহমান, মো.ফখরুল ইসলাম, মুজিবুর রহমান মজনু, সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আয়াছ আহমদ, সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মারুফ আহমেদ।
এতে আরো বক্তব্য রাখেন, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এম এ মোহিত ও জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবিদুর রহমান সোহানসহ স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এর আগে, দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিগণকে সঙ্গে নিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন, সদর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ব মো. বদরুল আলম।
দীর্ঘ সতের বছর পর স্থানীয় বিএনপির কাউন্সিলকে ঘিরে তৃণমূলের নেতা-কর্মী ও জনসাধারণের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়।
আরএম/এসএন