চট্টগ্রামের র্যাব-৭ সদর দফতরে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পলাশ সাহার গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, স্ত্রী সুস্মিতা সাহার সঙ্গে দীর্ঘদিনের পারিবারিক কলহ এবং মা ও ভাইয়ের গায়ে হাত তোলার ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন পলাশ।
আজ (৭ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁওয়ে অবস্থিত র্যাব-৭-এর কার্যালয় থেকে পলাশ সাহার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তার নিজের নামে ইস্যুকৃত পিস্তল এবং একটি চিরকুট ঘটনাস্থলেই পাওয়া গেছে।
চিরকুটে লেখা ছিল, “আমার মৃত্যুর জন্য মা বা বউ কেউ দায়ী নয়। আমিই দায়ী। কাউকে ভালো রাখতে পারিনি। বউ যেন সব স্বর্ণ নিয়ে যায় এবং ভালো থাকে। মায়ের দায়িত্ব দুই ভাইয়ের ওপর। তারা যেন মাকে ভালো রাখে। স্বর্ণ বাদে যা কিছু আছে, তা মায়ের জন্য। দিদি যেন সবকিছু কো-অর্ডিনেট করে।”
তবে পরিবারের দাবি, আত্মহত্যার পেছনে মূল কারণ স্ত্রী সুস্মিতা সাহার আচরণ। পলাশ সাহার বড় ভাই নন্দ লাল সাহা বলেন, “বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই পলাশের স্ত্রীর সঙ্গে পরিবারে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। আজ সকালে সামান্য বিষয় নিয়ে মা ও ভাইয়ের গায়ে হাত তোলে পলাশের স্ত্রী। এটা পলাশ কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি।”
র্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক এ. আর. এম. মোজাফফর হোসেন জানান, পলাশ সাহা অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। অস্ত্র ইস্যু করে নিজ কক্ষে প্রবেশ করার কিছুক্ষণ পর গুলির শব্দ শুনে র্যাব সদস্যরা সেখানে গিয়ে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন বলেন, “পলাশ সাহাকে দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতালে আনা হয়। তার কানের পাশে গুলির চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্ত ছাড়া নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না।”
৩৭ বছর বয়সী পলাশ সাহা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ছিলেন এবং ৩৭তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে উত্তীর্ণ হন। এর আগে তিনি সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
এএসপি পলাশ সাহার অকালমৃত্যুতে সহকর্মী ও বন্ধুদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনে তদন্ত চলছে।
এসএস