যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যযুদ্ধের দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে ৯০ দিন যথেষ্ট?

যুক্তরাষ্ট্র ও চীন নিজেদের পণ্যের ওপর আরোপিত ১১৫ শতাংশ শুল্ক ৯০ দিনের জন্য প্রত্যাহার করতে সম্মত হয়েছে। এটি তাদের চলমান বাণিজ্যবিরোধে আপাতত একটি সাময়িক বিরতি দিলেও, অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—এই সময়সীমা কি দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার সমাধানে যথেষ্ট?

বিবিসির বাণিজ্য প্রতিবেদক জনাথন জোসেফের মতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে তার শুল্কনীতি দিয়ে বৈশ্বিক অর্থনীতিকে দুলিয়ে দিয়েছেন, তাতে ৯০ দিন একটি দীর্ঘ সময় বলে মনে হলেও, তা হয়তো যথেষ্ট নয়। তবে এই সময়সীমা অন্তত যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত করতে সহায়ক হবে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার শাসনামলে বারবার বাণিজ্য ভারসাম্য ও মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। যদিও দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা শেষে ২০২০ সালে একটি ‘ফেজ ওয়ান ট্রেড চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যেখানে চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অতিরিক্ত ২০০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এবং মেধাস্বত্ব সুরক্ষায় আরও কঠোর হওয়ার কথা বলেছিল। বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র কিছু শুল্ক প্রত্যাহার করে।

কিন্তু বাস্তবে চীন সেই আমদানি লক্ষ্য পূরণ করতে পারেনি এবং মেধাস্বত্ব লঙ্ঘনের অভিযোগও থেকে গেছে। ফলে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জটিল হয়েছে এবং একে অপরের বিরুদ্ধে আরও বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।

এই প্রেক্ষাপটে দেখা যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের দ্বন্দ্ব শুধু শুল্ক বা আমদানিনির্ভর নয়—এটি দুটি ভিন্ন অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সংঘাত। চীন যেভাবে সরকারনির্ভর নীতির মাধ্যমে অর্থনীতি পরিচালনা করে, তা যুক্তরাষ্ট্রের মুক্ত বাজার ব্যবস্থার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নীতিও ছিল এসব মৌলিক পার্থক্য দূর করার চেষ্টা, যার ফলশ্রুতিতে শুরু হয়েছিল এই বাণিজ্যযুদ্ধ।

Share this news on: