সুনীল-অনিলরা দৌড়াচ্ছেন, আর গোবিন্দা ঘরে বসে! আক্ষেপ সুনীতার

বলিউড বর্তমানে বুড়ো হাড়ে ভেলকিতে কাবু! ষাটোর্ধ্ব সুপারস্টাররা নবীন প্রজন্মের তারকাদের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়ে নতুন ইনিংস তৈরি করছেন। সেই তালিকায় যেমন সানি দেওল, অনিল কাপুর রয়েছেন, তেমন অনুপম খের, মিঠুন চক্রবর্তী থেকে সুনীল শেট্টিরাও আছেন। এঁদের প্রত্যেকেই কেউ বড় পর্দা আবার কেউ বা ওটিটির দুনিয়ায় দাপিয়ে কাজ করছেন। অন্যদিকে ষাট ছুঁইছুঁই শাহরুখ, সলমনরাও কম যান না গ্ল্যামারে। কিন্তু বহুদিন ধরেই পর্দা থেকে ‘বেপাত্তা’ নব্বইয়ের দশকের ‘হিরো নম্বর ওয়ান’ গোবিন্দা। সম্প্রতি এপ্রসঙ্গেই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন গোবিন্দার স্ত্রী সুনীতা আহুজা।

বছর খানেক ধরেই বলিউডের পর্দায় গরহাজির গোবিন্দা। ২০১৯ সালে শেষবার ‘রঙ্গিলা রাজা’ ছবিতে দেখা যায় তাঁকে। সেই সিনেমা যদিও বক্স অফিসে সাফল্যের মুখ দেখেনি, তবে পর্দায় গোবিন্দাকে এখনও মিস করেন দর্শক-অনুরাগীরা। দক্ষ অভিনেতা হওয়া সত্ত্বেও কেন হিন্দি সিনেমায় আর দেখা যায় না তাঁকে? সম্প্রতি ‘শক্তিমান’ মুকেশ খান্নার ইউটিউব চ্যানেলে এপ্রসঙ্গে মুখ খুলেছিলেন ‘হিরো নং ১’ গোবিন্দা। সেখানেই তাঁর বিস্ফোরক মন্তব্য, ‘বলিউড নাকি ষড়যন্ত্র কষে ইন্ডাস্ট্রি থেকে সরাতে চেয়েছিল তাঁকে।’ তবে গোবিন্দার স্ত্রী সুনীতার অভিযোগ, “অভিনেতা নাকি বাড়িতে বসে নিজের জীবন নষ্ট করছেন।”

ঠিক কী বললেন সুনীতা আহুজা? সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি সবসময়ে গোবিন্দাকে বলি- তুমি তো কিংবদন্তী একজন অভিনেতা। নব্বইয়ের দশকে ইন্ডাস্ট্রির রাজা ছিলে। আজকের প্রজন্মের ছেলেপিলেরাও ওঁর গানে নাচে। আমি গোবিন্দাকে সবসময়ে বলি একটু ভালো বন্ধুদের সঙ্গে ওঠাবসা করো। তোমার মতো লেজেন্ড কেন বাড়িতে বসে থাকবে? তোমার বয়সি অভিনেতারা, যেমন- সুনীল শেট্টি, জ্যাকি শ্রফ, অনিল কাপুররা কত কাজ করছেন। তুমি কেন কাজ করো না?” গোবিন্দাপত্নী জানালেন, তাঁদের সন্তানরাও চান বাবা কাজে ফিরুক। কাজের প্রতি গোবিন্দার এই উদাসীনতার জন্য অভিনেতার বন্ধুসঙ্গকেই দায়ী করেছেন সুনীতা আহুজা। তাঁর কথায়, “আমি ওঁকে বলি- তুমি যেসমস্ত বন্ধুবান্ধবদের মেলামেশা করো, তারা তো তোমাকে ভালো উপদেশ দেয় না। শুধু তোমার কথায় সায় দিয়ে যায়। আমি সেইসমস্ত তথাকথিত বন্ধুদের বলতে চাই- আচ্ছা গোবিন্দা তোমাদের টাকা দিয়েও সাহায্য করেছে, তাহলে কেন ওঁকে তোমরা সঠিক পথ দেখাও না?”

গোবিন্দাপত্নীর অভিযোগ, “এটা তো নব্বইয়ের দশক নয়, এটা ২০২৫ সাল। সেই সময়কার মতো সিনেমা আজকার আর কেউ দেখেন না। তাই কালের নিয়মে গোবিন্দারও উচিত শারীরিক গড়নে পরিবর্তন নিয়ে আসা। কেউ গোবিন্দাকে কেন বলে না যে ওঁর ওজন কমানো উচিত। দুটো টাকার জন্য ওর তথাকথিত বন্ধুরা ওঁর জীবন নষ্ট করে দিল। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির তারকাদের আসলে অভ্যেস হয়ে গিয়েছে বরাবর নিজেদের প্রশংসা শোনার। ওরা সত্যিটা শুনতে চায় না। ওই নব্বইয়ের দশকে যেমন ছিল, সকলে বলত- গোবিন্দার মতো আর একজন অভিনেতা নেই। গোবিন্দার উচিত ছিল ভালো সিনেমা, ভালো পরিচালক নির্বাচন করা। এই বিষয়ে ওঁর বড় গাফিলতি রয়েছে।”

উল্লেখ্য, গোবিন্দা এপ্রসঙ্গে আগে জানিয়েছিলেন, “একটা সময়ে লাগাতার আমাকে মানহানির মুখে পড়তে হয়েছে। আর সেটা পূর্ব পরিকল্পিতই ছিল। ওঁরা আমাকে বলিউড ইন্ডাস্ট্রি থেকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিল। তখন বুঝলাম যে, আমি ইন্ডাস্ট্রির এক অশিক্ষিত বহিরাগত হয়ে বলিউডের শিক্ষিত লোকদের বলয়ে ঢুকে পড়েছি। তাই ওঁরা আমাকে নিয়ে খেলছে। আমি ওদের নাম বলতে পারব না। কারণ আমি এখনও এই ইন্ডাস্ট্রির অংশ। এবং লড়ে যাচ্ছি।”

এফপি/টিএ

Share this news on: