স্ক্যাবিস থেকে বাঁচার উপায়, সতর্ক হন এখনই!

স্ক্যাবিস এক ধরনের ছোঁয়াচে চর্মরোগ, যা স্ক্যাবি মাইট নামক একধরনের পরজীবীর কারণে হয়ে থাকে। অনেকেই এই রোগটিকে সাধারণ এলার্জি ভেবে অবহেলা করেন, অথচ এটি একটি প্যারাসাইটিক স্কিন ডিজিজ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্য অনুযায়ী প্রতি বছর প্রায় ৫০০০০ জনের বেশি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হন। তবে চলতি বছর বাংলাদেশে এর প্রকোপ তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।

বিশেষ করে কুমিল্লা ও রাজশাহী অঞ্চলে স্ক্যাবিসের বিস্তার উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। জানুয়ারি থেকে মে মাসের গ্রীষ্মপ্রধান সময়ে রোগটির প্রকোপ বাড়তে দেখা যায়। পাশাপাশি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, যেমন মাদ্রাসা, স্কুল হোস্টেল এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো এই রোগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

স্ক্যাবিসের লক্ষণ কী কী?

সংক্রমণের ১৫ দিন পর চুলকানি শুরু হয়

প্রথম লক্ষণ দেখা দেয় আঙুলের ফাঁকে, যেখানে ত্বক নরম

ছোট ছোট পানির দানা মতো ফুসকুড়ি

নারীদের নিপলের চারপাশে এবং শিশুদের যৌনাঙ্গেও সংক্রমণ হতে পারে

চুলকানির তীব্রতা রাতে বাড়ে

অনেক সময় এই লক্ষণগুলো একজিমা বা অ্যালার্জির সাথে গুলিয়ে ফেলা হয়, ফলে ভুল চিকিৎসা হয় এবং রোগ জটিল আকার ধারণ করে।

ভুল চিকিৎসা রোগকে বাড়িয়ে তোলে!

দেশের একটি বড় অংশ স্কিন ডিজঅর্ডারে ভুগলে প্রথমেই ফার্মেসির পরামর্শ নিয়ে স্টেরয়েডজাত মলম ব্যবহার করে থাকেন। স্ক্যাবিসের ক্ষেত্রে এটি মারাত্মক ক্ষতি করে, কারণ স্টেরয়েডে সংক্রমণ লুকিয়ে গিয়ে আরও গভীরে প্রবেশ করে। এতে তৈরি হয় নডিউলার স্ক্যাবিস, যা বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে ভয়াবহ রূপ নেয়।

প্রতিরোধ ও সচেতনতাই মূল অস্ত্র

চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া মলম বা ওষুধ ব্যবহার করবেন না

পরিবারের সব সদস্যকে একসঙ্গে চিকিৎসা নিতে হবে

ব্যবহৃত পোশাক, বিছানার চাদর ও তোয়ালে গরম পানিতে ধুয়ে রোদে শুকাতে হবে

রোদ না পেলে গরম ইস্ত্রি ব্যবহার করে জীবাণু নষ্ট করতে হবে

নখ ছোট রাখা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা আবশ্যক

চর্মরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, স্ক্যাবিস এখন আর সাধারণ রোগ নয়। এটি একটি জনস্বাস্থ্য ইস্যুতে পরিণত হচ্ছে। তাই যেকোনো ধরনের চুলকানি বা ত্বকের সমস্যায় দেরি না করে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়াই শ্রেয়।
নিজে সচেতন হোন, পরিবারকেও সচেতন করুন। স্ক্যাবিস প্রতিরোধযোগ্য, যদি আমরা সতর্ক হই এখনই।

এফপি/টিএ 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
৪ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পে কেপে উঠলো নেপাল Dec 14, 2025
img
মাদ্রাসার এমপিও শিটে ত্রুটি, সংশোধিত এমপিও শিট জারি Dec 14, 2025
img
হাদিকে হত্যাচেষ্টার মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্টরা মাথাচাড়া দিতে চাচ্ছে : মির্জা ফখরুল Dec 14, 2025
img
আর কারো বাকস্বাধীনতা খর্ব করতে দেওয়া হবে না: মো. শহিদুল ইসলাম Dec 14, 2025
img

আসিফ নজরুল

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেব Dec 14, 2025
img
শুটিংয়ের মাঝেই চলছে বিয়ের পরিকল্পনা অভিনেত্রী মধুমিতার! Dec 14, 2025
img
থাইল্যান্ডের সীমান্তবর্তী প্রদেশে কারফিউ জারি Dec 14, 2025
img
মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি তুলে ধরতে বধ্যভূমি সংরক্ষণ করা জরুরি : চসিক মেয়র Dec 14, 2025
img
পুরাতন বিমানবন্দর ও আশপাশের এলাকায় ড্রোন ওড়ানো নিষেধ Dec 14, 2025
img
চট্টগ্রামে ট্রাক উল্টে প্রাণ গেল ২ জনের, আহত আরও ৪ Dec 14, 2025
img
পরিচিতি আর বন্ধুত্ব এক নয়: পরমব্রত চ্যাটার্জি Dec 14, 2025
img
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ইসির বৈঠক আজ বিকেলে Dec 14, 2025
img
৬ মাসে ১৮ কেজি কমিয়ে চমকে দিলেন বাঁধন Dec 14, 2025
img
তারেক রহমানকে এমন সংবর্ধনা দেয়া হবে যা কোনো নেতাকে দেয়া হয়নি: মির্জা ফখরুল Dec 14, 2025
img
আলাভেস ম্যাচের আগে এমবাপ্পেসহ ১২ খেলোয়াড় নিয়ে বিপাকে মাদ্রিদ কোচ Dec 14, 2025
img
‘বনলতা এক্সপ্রেস’ এর যাত্রী হলেন কারা? Dec 14, 2025
img
শেখ হাসিনা-সেনা কর্মকর্তাসহ অভিযোগ গঠনের আদেশ ২১ ডিসেম্বর Dec 14, 2025
img
সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় হতাহত ১৪ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর পরিচয় প্রকাশ করল আইএসপিআর Dec 14, 2025
img
জামিন না মঞ্জুর, শতদ্রুকে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠাল বিধাননগর মহকুমা আদালত Dec 14, 2025
img
জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা নিয়ে জরুরি নির্দেশনা Dec 14, 2025